সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা

আলোর পথে সুরুজ, দুই চাক্কায় জীবন বদল

আলোর পথে সুরুজ, দুই চাক্কায় জীবন বদল

এক সময় ভারতীয় গরু চোরাচালান ও মাদক ব্যবসাই ছিল তাঁর প্রধান পেশা। থানায় একাধিক মামলা থাকায় বেশ কয়েকবার হাজতও খেটেছেন। অন্ধকার জগৎ থেকে ফিরে বিকল্প পেশা বা কর্মসংস্থানে ফেরার চেষ্টাও করেছিলেন একাধিকার। কিন্তু কোনো সুযোগ পাননি সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলার বংশীকুন্ডা দক্ষিণ ইউনিয়নের জয়পুর গ্রামের সুরুজ আলী। কিন্তু মধ্যনগর থানার ওসি জাহিদুল হকের চেষ্টায় সুরুজ এখন আলোর পথের যাত্রী।

অবৈধ ব্যবসা ছেড়ে দিয়ে সুরুজ এখন নিতান্তই একজন যাত্রীবাহী মোটরসাইকেলের চালক। আর সেই মোটরসাইকেলও কেনা হয়েছে ওসি জাহিদুল হকসহ স্থানীয়দের দেওয়া অর্থে। গত কয়েক  দিন ধরে মোটরসাইকেল চালিয়ে জীবিকা নির্বাহের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন সুরুজ।

জয়পুর গ্রামের নূর ইসলাম ও মৃত হারবানুর ছেলে সুরুজ গত বেশ কয়েক বছর ধরে নিজ এলাকায় অবৈধ ব্যবসা পরিচালিত করে আসছিলেন। ফলে তাঁর নামে থানায় একাধিক মামলা হয়। এসব মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হলে পালিয়ে বেড়াতেন তিনি। কিন্তু মাস তিনেক আগে হঠাৎ তিনি এলাকায় এলে মধ্যনগর থানা পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় অবৈধ ব্যবসার কুফল সম্পর্কে ওসি জাহিদুল হক তাঁকে বুঝিয়ে বললে সুরুজের আলোর পথে ফেরার সুযোগ তৈরি হয়।

সুরুজের স্ত্রী সুরমা আক্তার থানায় উপস্থিত হয়ে সুরুজকে সুযোগ দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। পরে ওসি সুরুজকে তিন দিনের জন্য তাবলিগ জামাতে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। সেখান থেকে ফিরে সুরুজ অবৈধ ব্যবসা ছেড়ে দেন। তখন থেকে সুরুজ পুলিশের পর্যবেক্ষণে রয়েছেন।

সুরুজ আলী বলেন, ‘অন্ধকার জগৎ থেকে ফিরে আসতে চাইলেও এ ব্যাপারে কেউ তাঁকে সহযোগিতা করেনি। ওসি জাহিদুলের কথা শুনে এবং তাঁর দুটি মেয়ের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে এ জগৎ থেকে ফিরে এসেছেন। ওসির সহযোগিতায় একটি মোটরসাইকেল কিনে যাত্রী বহন করে জীবিকা নির্বাহ করছেন তিনি। স্থানীয়রা এখন তাঁকে অন্যভাবে মূল্যায়ন করছে।

মধ্যনগর থানার ওসি জাহিদুল হক বলেন, প্রতিটি মানুষেরই সুন্দর করে বাঁচার অধিকার রয়েছে। কেউ অপরাধ জগৎ থেকে ফিরে আসতে চাইলে সুযোগ দেওয়া উচিত। এ রকম যে কেউ থাকলে তাঁর পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে। সুরুজ আলী তাঁদের পর্যবেক্ষণে রয়েছেন।