বিলেতের করোনা নিয়ে সিলেটীদের দুশ্চিন্তা !

বিলেতের করোনা নিয়ে সিলেটীদের দুশ্চিন্তা !

সাত সমুদ্র তেরো নদী ওপারে বিলেতে (যুক্তরাজ্যে) আবারও হুহু কওে বাড়ছে প্রাণঘাতি করোনাভাইরাস। সেখানে প্রতিদিন গড়ে ২ লাখ মানুষ শনাক্ত হচ্ছে। করোনা আক্রান্ত বেড়ে চলছে বাঙালি কমিউনিটির মধ্যেও। এতে করে দুশ্চিন্তা বেড়েছে প্রবাসী অধ্যুষিত সিলেট অঞ্চলে। কারণ সেখানে বসবাস করেন সিলেট বিভাগের প্রায় ৫ লাখের মতো অধিবাসী।

সম্প্রতি প্রকাশিত ‘অফিস ফর ন্যাশনাল স্ট্যাটিসটিক্স’-এর তথ্যমতে, যুক্তরাজ্যে প্রতি ১৫ জনে একজন করোনা আক্রান্ত হলেও লন্ডনে প্রতি ১০ জনে একজন পজিটিভ ধরা পড়ছেন। এমন খবরে প্রবাসে থাকা স্বজনদের নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন সিলেটের মানুষজন। ইতোমধ্যে যুক্তরাজ্যে বসবাসরত অনেকের পরিবারে করোনা হানা দিয়েছে বলে দেশে খবর আসছে। যে পরিবারে করোনাভাইরাস সংক্রমিত হচ্ছে পুরো পরিবারকে আক্রান্ত করছে। এতে দুশ্চিন্তার মাত্রা আরো বাড়ছে।

যুক্তরাজ্যের প্রবাসী সাংবাদিক জাবেদুর রশীদ। তিনি সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার বাসিন্দা। মুঠোফোনে তিনি জানান, করোনার প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউয়ে সিলেটের অনেকেই আমরা হারিয়েছি। তাই করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন উদ্বেগ তৈরি করেছে প্রবাসীদের মাঝে, বিশেষ করে সিলেটী মানুষ জনের মধ্যে বেশী ভয়ভীতি রয়েছে। দেশ থেকে অনেকের কাছেই ফোন আসে যাতে তারা আপাতত কাজে না যান। বাচ্চাদের স্কুলে যেতেও বারণ করছেন দেশের স্বজনরা। এরকম বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছেন।

তিনি জানান- লন্ডন, মানচেষ্টার, বার্মিংহাম, লুটন শহরে বসবাসকারী প্রবাসীরা ঘরে ঘরে করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। মৃত্যুও হচ্ছে অনেকের। যাদের শ্বাসকষ্ট তীব্র হচ্ছে তাদের হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে। আবার অনেকেই বাসায় আইসোলেশনে থেকে সুস্থ হচ্ছেন। সব মিলিয়ে একটা খারাপ সময় যাচ্ছে বাঙ্গালী কমিউনিটির।

যুক্তরাজ্যে বসবাস করা অন্তত দশজন প্রবাসী জানান, যেহেতু এখনো সরকার লকডাউন ঘোষণা করেনি তাই ঝুঁকি নিয়েই তাদের কাজে যেতে হচ্ছে। বাচ্চাদের স্কুল বন্ধ করার কোনো সুযোগ নেই। মনের মধ্যে সবসময় একটা অদৃশ্য ভয় বিরাজ করে। কখন যেন কি হয়ে যায়। অনেকটা ভাগ্যের ওপর সবকিছু ছেড়ে দিয়েই তাদের চলতে হচ্ছে। তবে তারা সর্বোচ্চ সর্তকতায় চলাফেরা করেন।

সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার কালিগঞ্জ এলাকার চৌধুরী আলী আনহার শাহান জানান, তার ভাই ও বোন যুক্তরাজ্যের বসবাস করেন। যুক্তরাজ্যে করোনা বাড়ার কারণে  দেশে তারা খুবই দুশ্চিন্তায় আছে। প্রতিদিনই খোঁজ-খবর নিচ্ছে কি হচ্ছে না হচ্ছে। সবসময় সর্তক থাকার পরার্মশ দিচ্ছেন।

সিলেট নগরের সুবিদবাজার এলাকার বাসিন্দা আব্দুস সালাম জানান, তার ভাইসহ পরিবারের দশজন মানুষ লন্ডনে থাকেন। গত বছর তারা করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। পওে সুস্থ্য হয়েছেন। মধ্যখানে টিকাও নিয়েছেন। কিন্তু এখন ফের তার পরিারের দুজন আক্রান্ত হয়েছেন। এখন তারা লন্ডনের একটি স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

এদিকে, করোনা আক্রান্তদের সুস্থতা ও মহামারি থেকে প্রবাসে বসবাসরত স্বজনদের রক্ষায় সিলেটের প্রায় প্রতিটি মসজিদে শুক্রবার বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনও পার্লামেন্ট অধিবেশনে করোনার দ্রুত সংক্রমণের বিষয়টি জানিয়েছেন। বরিস বলেন, মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত এত দ্রুতগতিতে সংক্রমণ ঘটেনি কখনো।