রাস্তায় যানজট, অফিস-আদালতে কঠোর লকডাউন

রাস্তায় যানজট, অফিস-আদালতে কঠোর লকডাউন
ফাঁকা সচিবালয়

নিজামুল হক বিপুল, ঢাকা: দেশে কোভিড-১৯ এর দ্বিতীয় ঢেউ ঠেকাতে গত ১৪ এপ্রিল থেকে দেশ জুড়ে কঠোর লকডাউন চলছে। তৃতীয় দফায় এই লকডাউনের মেয়াদ আগামী ৫ মে পর্যন্ত বাড়িয়েছে সরকার। বুধবার এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করার কথা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের। কিন্তু রাজধানী ঢাকার রাস্তায় নামলে বুঝার কোন উপায় নেই যে দেশে লকডাউন চলছে। 

সরকার একদিকে কঠোর লকডাউনের কথা বললেও অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে আসন্ন ঈদ উপলক্ষে দোকানপাট, শপিং মল, বড় বড় মার্কেট, হাটবাজার সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা রাখার নির্দেশনা দিয়েছে।  অপরদিকে গণপরিবহন, সরকারি, বেসরকারি অফিস, আদালত, সবকিছু বন্ধ থাকছে। কিন্তু এই কঠোর লকডাউনের মধ্যেই গত কয়েকদিন ধরে শহরের সড়ক জুড়ে ব্যক্তিগত গাড়ির চাপ এতোটাই বেড়েছে যে নগরীর অনেক পয়েন্টে দীর্ঘ যানজটও চোখে পড়ছে।

গত সোম ও মঙ্গলবার প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র বাংলাদেশ সচিবালয় ঘুরে দেখা গেছে, সচিবালয়ের প্রায় সবক’টি ভবনেই তালা ঝুলছে। ভবনগুলোর প্রায় প্রত্যেক ফ্লোরের লোহার ফটক বন্ধ রয়েছে।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও সচিবের দপ্তরসহ একাধিক জরুরি শাখা, কৃষি মন্ত্রণালয়ের কয়েকটি শাখা, তথ্য অধিদপ্তরে প্রধান তথ্য কর্মকর্তার দপ্তর ও নিউজরুম, অর্থমন্ত্রণালয়ের বাজেট শাখাসহ আরও কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের জরুরি শাখাগুলো খোলা রয়েছে। অধিকাংশ ভবনের নিচতলার ফ্লোরে দেখা গেছে, অনেকগুলো কুকুর হাঁটাচলা করছে। অনেকটা প্রহরীর ভূমিকা পালন করছে।

মঙ্গলবার সচিবালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, ৪ নম্বর ভবনের মধধ্যের লিফট দিয়ে উঠে দেখা গেছে, নবম ফ্লোরে অবস্থিত তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় পুরোটাই বন্ধ। অষ্টম তলায় আইন মন্ত্রণালয়ের ফ্লোরে একটি কক্ষের আধুনিকায়নে কাজ করছেন শ্রমিকরা। সপ্তম তলায় আইন মন্ত্রণালয়ের অপর ফ্লোরেও কোন কক্ষ খোলা নেই।

সপ্তম তলায় পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের শুধুমাত্র সচিবের দপ্তরের প্রশাসনিক কর্মকর্তার কক্ষ ছাড়া সব শাখায়ই বন্ধ। পঞ্চম ও ষষ্ঠ তলায় কৃষি মন্ত্রণালয়ের কয়েকটি কক্ষ খোলা। কর্মকর্তারা খুবই সীমিত পরিসরে জরুরি কাজ করছেন। চতুর্থ তলায় ভূমি মন্ত্রণালয় পুরোটাই তালাবদ্ধ। 

তৃতীয় তলায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর কক্ষটি রেন্যুভেশন হচ্ছে। এই ফ্লোরের একেবারে পশ্চিম পাশে তথ্য অধিদপ্তরে প্রধান তথ্য কর্মকর্তা সুরথ কুমার সরকার অফিস করছেন। খোলা রয়েছে নিউজরুমও।

এই লকডাউনে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একেক শাখা একেকদিন রোস্টার করে খোলা রাখা হচ্ছে জরুরি কাজের জন্য।  একজন করে অতিরিক্ত সচিব, যুগ্ম-সচিব, উপসচিবসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা অফিস করছেন।

সরকারি দপ্তরগুলোতে কঠোর লকডাউন যথাযথভাবে মানা হলেও রাজধানীর রাস্তায় তার কোন প্রভাব নেই। মঙ্গলবার সকাল ১১টায় মোহাম্মদপুর থেকে বের হয়ে সচিবালয় সচিবালয় যেতে যেতে কারওয়ান বাজার ও  বাংলামটরে যানজটে পড়তে হয়েছে। একইভাবে বিকেল সাড়ে ৪টায় সচিবালয় থেকে ফেরার পথে বাংলামটর থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত দীর্ঘ যানজট ছিল। শুধুমাত্র প্রাইভেট গাড়ি, পিকআপ, কাভার্ডভ্যান, ব্যাটারিচালিত রিকশা, সিএনজি চালিত অটোরিকশার ব্যাপক চাপ ছিল সোনারগাঁ মোড় থেকে কলাবাগান মোড় পর্যন্ত থেমে থেমে যানহট ছিল।