নগরে মশার উপদ্রব

সিলেটে দিনেও নিস্তার নেই মশার কামড় থেকে

সিলেটে দিনেও নিস্তার নেই মশার কামড় থেকে
সিলেটে বেড়েছে মশার উপদ্রব

কামরুল ইসলাম মাহি: প্রাণঘাতি করোনায় সারা দেশের ন্যায় টালমাটাল সিলেট। প্রতিদিন বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃত্যু। এরমধ্যে গরমে হাঁসফাঁস মানব জীবন। ইবাদতের 'বসন্তকাল' রমজান মাসও চলছে। এতো সবের মধ্যেও সিলেটে মশা উৎপাত ঠেকাতে কর্তৃপক্ষের যেন তেমন সু-নজর নেই।

বেশ কিছুদিন থেকেই সিলেট নগরে মশার উৎপাত বেড়েছে। সন্ধ্যা থেকে রাত, এমনকি দিনেও নিস্তার নেই মশার কামড় থেকে। ফুটপাত থেকে বাসাবাড়ি—সব জায়গায় এখন মশার উপদ্রব। মশার কামড়ে অতিষ্ঠ নগরবাসী।

নগরবাসী বলছেন, সন্ধ্যা হলেই বাসার দরজা-জানালা বন্ধ করেও মশার উপদ্রব থেকে রেহাই পাচ্ছেন না তারা। তবে মাঝেমধ্যে কোনো কোনো এলাকায় মশক নিধনে ওষুধ ছিটানো হলেও মরছে না মশা।

অভিযোগ রয়েছে, এ বছর শীত মৌসুমে নগরীতে প্রয়োজনীয় পরিমাণ মশার ওষুধ ছিটানো হয়নি। তাছাড়া নালা-নর্দমাগুলো পরিষ্কার না করায় মশার উপদ্রব বেড়েছে। মাঝেমধ্যে কোনো কোনো এলাকায় ওষুধ ছিটানো হলেও মশা মরছে না। মশা নিধনে বাজেটে বরাদ্দ দ্বিগুণ হয়েছে। এরপরও কাঙ্ক্ষিত ফল পাওয়া যাচ্ছে না।

সিসিক কর্তৃপক্ষের দাবি, করোনার টিকা কার্যক্রমের ব্যস্ততার কারণে মশার ওষুধ ছিটানো কার্যক্রমে কিছুটা স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। আজ থেকে পুনরায় পুরোদমে মশক নিধন কার্যক্রম শুরু হবে।

প্রতি বছর শীত মৌসুমে নগরীর ২৭টি ওয়ার্ডে একযোগে মশক নিধন কার্যক্রম শুরু করে সিসিক। মশার প্রজনন প্রতিরোধ করতে নগরীর ভেতরের নালা-নর্দমা ও ঝোপঝাড় পরিষ্কার করা হয়। কিন্তু এ বছর মশক নিধন কার্যক্রম চলছে শম্বুক গতিতে। একসঙ্গে মশক নিধন কার্যক্রম শুরু করতে না পারায় মশার উপদ্রব থেকে রক্ষা পাচ্ছেন না নগরবাসী। এ ছাড়া নালা-নর্দমা পরিষ্কার না করায় মশার বংশবিস্তারও রোধ করা যাচ্ছে না।

জানা গেছে, নগরীর সব এলাকায়ই বেড়েছে মশার উপদ্রব। মশার যন্ত্রণায় অনেকে দিনের বেলায়ও কয়েল জ্বালাতে বাধ্য হচ্ছেন। তবে, সন্ধ্যার পর মশার উপদ্রব বেড়ে যায় কয়েকগুণ। বাসাবাড়ি, অফিস-আদালত সব জায়গায়ই মশার উৎপাত।

নগরের দরগাহ এলাকার বাসিন্দা জালাল আহমেদ জানান, 'আমাদের ছয়তলা আমি নিচতলায় থাকি। মশার ভয়ে সন্ধ্যার আগেই বাসার দরজা-জানালা বন্ধ করে রাখি। এরপরও মশা থেকে রেহাই মিলছে না।

জালালাবাদ এলাকার বাসিন্দা আবিদ কাওসার জানান, আমাদের এলাকায় মশার ওষুধ ছিটানো হয়েছিল কিছুদিন আগে। কিন্তু ওষুধ ছিটানোর পরও মশা মরেনি।

সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. জাহিদুল ইসলাম বলেন, মেডিসিন ও বরাদ্দ পর্যাপ্ত থাকলেও জনবল সংকটের কারণে সঠিকভাবে ওষুধ প্রয়োগ করা যাচ্ছে না। তাছাড়া অনেক সীমাবদ্ধতাও রয়েছে। আমরা আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে মশার ওষুধ প্রয়োগ করি। জনবল সংকট হওয়ায় আউটসোর্সিংয়ের কর্মীদের তদারকিও করা সম্ভব হয় না। এক্ষেত্রে প্রতিটি ওয়ার্ডের সচেতন নাগরিকদের তদারকি প্রয়োজন।

এ ব্যাপারে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায় বলেন, সিটি করপোরেশন মশক নিধনে যেসব মেডিসিন ব্যবহার করছে সেগুলো খুবই ভালো মানের। সঠিক নিয়মে যথাযথ প্রয়োগ না হওয়ায় ফলাফল পাওয়া যাচ্ছে না।