অভিযোগ প্রমাণ হলে ৫ বছর জেল হতে পারে পরীমনির

অভিযোগ প্রমাণ হলে ৫ বছর জেল হতে পারে পরীমনির

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে দায়ের করা মামলায় ঢাকাই চলচ্চিত্রের আলোচিত নায়িকা পরীমনি চার দিনের রিমান্ডে রয়েছেন। এই মামলার সাক্ষ্য প্রমাণে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ পাঁচ বছর কারাদণ্ড হতে পারে। হতে পারে অর্থদণ্ডও।

বুধবার রাতে বনানীর বাসা হতে পরীমনিকে আটক করে র‌্যাব সদর দফতরে নেয়া হয়। ২০ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বনানী থানায় তাঁকে হস্তান্তর করে র‌্যাব। এরপর র‌্যাব বাদী হয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করে।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৮ এর ৩৬ (১)-এর সারণি ২৪ (খ) ধারায় বলা হয়েছে, মাদকদ্রব্যের পরিমাণ ১০ কেজি বা লিটারের বেশি এবং ১০০ কেজি বা লিটারের কম হলে কমপক্ষে তিন বছর ও সর্বোচ্চ পাঁচ বছর কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড হবে।

৩৬ (১) এর সারণি ১০ (ক) ধারায় বলা হয়েছে, মাদকদ্রব্যের পরিমাণ সর্বোচ্চ ২০০ গ্রাম বা মিলিলিটার হলে কমপক্ষে এক বছর ও সর্বোচ্চ পাঁচ বছরে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড হবে।

৪২ (১) ধারায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি যদি এই আইন অথবা বিধির কোনো বিধান লঙ্ঘন করে যাতে স্বতন্ত্র কোনো দণ্ড নেই, তাহলে তিনি ওই অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ এক বছর কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

৪১ ধারায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি কোনো মাদকদ্রব্য অপরাধ সংঘটনে কাউকে প্ররোচণা দিলে অথবা সাহায্য করলে অথবা কারো সঙ্গে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হলে অথবা এ উদ্দেশ্যে কোনো উদ্যোগ অথবা চেষ্টা করলে মাদকদ্রব্য অপরাধ সংঘটিত হোক বা না হোক, তিনি সংশ্লিষ্ট অপরাধের জন্য নির্ধারিত দণ্ডের মতো দণ্ড পাবেন।

বৃহস্পতিবার (৫ আগস্ট) রাতে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে পরীমনিকে হাজির করা হয়। এরপর মাদক মামলায় তাঁকে সাত দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শেখ সোহেল রানা।

অন্যদিকে পরীমনির আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম মামুনুর রশীদ তাঁর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

শুনানিতে আব্দুল্লাহ আবু বলেন, ‘পরীমনির বাসায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ মাদক উদ্ধার করা হয়েছে। যার বাজার মূল্য দুই লাখ ১১ হাজার ৫০০ টাকা। এই মাদক কোথা থেকে আসলো? তার উৎস কী? কে এই মাদক পাঠালো? মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তাঁকে রিমান্ডে নেয়া প্রয়োজন।’

এদিকে, পরীমনির আইনজীবী নীলঞ্জনা রিফাত সুরভি দাবি করেন, ‘পরীমনি ষড়যন্ত্রের শিকার। তাঁর বাসায় কোনো মদ পাওয়া যায়নি। তাঁর বাসা থেকে যে সাড়ে ১৮ লিটার মদ জব্দ দেখানো হয়েছে - সেটি তাঁর বাসায় ছিল না। তাঁর বাসায় কিছু খালি মদের বোতল ডেকোরেশন পিস হিসেবে রাখা ছিল। সেগুলোকে জব্দ তালিকায় দেয়া হয়েছে। এছাড়াও তাঁর কাছে কোনো আইস এবং এলএসডি ছিল না। আমরা তাঁর জামিন চাই।’

এই আইনজীবী আরো বলেন, ‘এই মামলায় পরীমনিকে হয়রানির পেছনে রয়েছে আগের একটা দ্বন্দ্ব (নাসিরের বিরুদ্ধে মামলা)। তাঁর মান-সম্মান নষ্টের জন্যই এই মামলা। এরকম স্বনামধন্য একজন নায়িকার মান-সম্মান যাতে ক্ষুণ্ণ না হয়, সেজন্য রিমান্ড নামঞ্জুর করা প্রয়োজন। তাঁকে জামিন দেয়া উচিত।’