আগামী মাসে 'আপন নীড়ে' যাচ্ছেন সিলেটের ১৯৭৯ গৃহ-ভূমিহীন পরিবার

আগামী মাসে 'আপন নীড়ে' যাচ্ছেন সিলেটের ১৯৭৯ গৃহ-ভূমিহীন পরিবার

জাগো সিলেট: আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর অধীনে দ্বিতীয় ধাপে আগামী জুন মাসে আধা-পাকা বাড়ি পাচ্ছে সিলেট বিভাগের ১ হাজার ৯৭৯ জনসহ সারা দেশের আরও প্রায় ৫৩ হাজার ৫০০ গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবার। এর আগে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে সিলেট বিভাগের ২ হাজার ৬৬৮ হাজার পরিবাররে মাঝে ঘর হস্তান্তর করা হয়েছিল।

সোমবার (০৩ মে) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এক বৈঠকে আগামী জুন মাসের শুরু থেকে দ্বিতীয় ধাপে নির্মিত বাড়িগুলো বিতরণ শুরু করার পরিকল্পনা হয়।

আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর অধীনে বাড়ি নির্মাণ কার্যক্রমের অগ্রগতি নিয়ে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস।

বৈঠকে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া। পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনে কাজের অগ্রগতি তুলে ধরেন আশ্রয়ণ-২ প্রকল্প পরিচালক মো. মাহবুব হোসেন। বৈঠকে সব বিভাগীয় কমিশনার, উপ-কমিশনার (ডিসি) এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ভার্চ্যুয়ালি সংযুক্ত ছিলেন।

বৈঠকে মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের কোনো রকম ব্যত্যয় ছাড়া গুণগত মান ঠিক রাখার পাশাপাশি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়।

আগামী বছর সরকার গৃহহীন ও ভূমিহীনদের মাঝে ১ লাখ ২৫ হাজার বাড়ি বিতরণ করবে। বর্তমানে দ্বিতীয় ধাপের বাড়িগুলো নির্মাণের পাশাপাশি আগামী বছর যে ১ লাখ ২৫ হাজার বাড়ি দেবে সরকার তা নির্মাণে এখন থেকে প্রস্তুতি নিতে বলা হয় মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের।

বাড়ির গুণগত মান নিশ্চিত করতে মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস বলেন, গুণগত মানের বিষয়ে কোনো আপস করা হবে না। যদি কোন ব্যত্যয় পাওয়া যায় আমরা জিরো টলারেন্স দেখাবো।

‘গৃহহীন ও ভূমিহীনদের জন্য বাড়ি নির্মাণ করে দেওয়া, প্রধানমন্ত্রীর এ কর্মসূচি পৃথিবীতে বিরল মডেল। অসহায় মানুষের জন্য বাড়ি নির্মাণ করে দেওয়া এ কর্মসূচির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর আবেগ মিশে আছে। তিনি প্রতিনিয়ত এর খোঁজ খবর রাখেন। ’

সভায় আশ্রয়ণ প্রকল্পে উপকারভোগীদের একটি ডাটাবেজ তৈরি করতে বলেন মূখ্য সচিব। কাজে কোনো অসঙ্গতি হলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সংশ্লিষ্টদের সর্তক করেন তোফাজ্জল হোসেন মিয়া।

১ লাখ ৭১ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মিত প্রতিটি ঘর ইটের দেওয়াল, কংক্রিটের মেঝে এবং টিনের ছাউনি দিয়ে তৈরি। এসব সেমিপাকা ঘরে দুইটি শয়নকক্ষ, একটি খোলা বারান্দা, একটি রান্না ঘর এবং একটি শৌচাগার আছে। এর বাইরে সামনে এবং পিছনের অংশে রাখা হয়েছে পর্যাপ্ত খোলা জায়গা।

বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) কার্যালয় সিলেট সূত্রে জানা যায়, প্রকল্পের আওতায় সবচেয়ে বেশি ঘর নির্মাণ হচ্ছে সিলেট জেলায়। এ জেলায় ৪ হাজার ১৭৮ জন এসব ঘর পাবেন। আর সবচেয়ে কম ঘর নির্মাণ হচ্ছে হবিগঞ্জ জেলায়। এ জেলায় মাত্র ৭৮৭ জন পাচ্ছেন সেমিপাকা এ ঘর। এর বাইরে সুনামগঞ্জ জেলায় ৩ হাজার ৯০৮ এবং মৌলভীবাজারে ১ হাজার ২২৬ হাজার জন পাবেন এ ঘর। এরমধ্যে গত ২৩ জানুয়ারি সিলেট জেলায় ১ হাজার ৪০৬, সুনামগঞ্জে ৪০৭, হবিগঞ্জে ৩১৩ এবং মৌলভীবাজারে ৫৪২ টি ঘর হস্তান্তর করা হয়।