কানাইঘাটে নারীর শ্লীলতাহানির ঘটনায় আটক ৪

কানাইঘাটে নারীর শ্লীলতাহানির ঘটনায় আটক ৪

সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার আগতালুক গ্রামের চার সন্তানের জননী পঞ্চাশোর্ধ্ব এক নারীর সঙ্গে ঘটল অমানবিক এক ঘটনা। মায়ের শ্লীলতাহানি করে দুবাই প্রবাসী দুই ছেলের কাছে মায়ের ইজ্জতের বিনিময় চাওয়া হলো পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা। অতঃপর এক লাখ টাকা নিলেও শ্লীলতাহানির ভিডিওটি ছড়িয়ে দেওয়া হলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এ ঘটনায় চারজনকে আসামি করে কানাইঘাট থানায় মামলা দায়ের করেছেন ওই নারী।

গত ২৩ আগস্ট রাতে যৌন হেনাস্তা ও শ্লীলতাহানির ঘটনাটি ঘটলে সোমবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিকালে বেনামি একাধিক আইডি থেকে সাড়ে ৪ মিনিটের ওই ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়া হয়।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও থেকে দেখা যায়, চারজন যুবক একজন মধ্যবয়স্কা নারীকে টানাহেঁচড়া করছেন। এসময় মধ্যবয়স্ক ওই নারী নিজেকে মুক্ত করতে বার বার হাত জোড় করে আকুতি করছেন। কান্নাকাটি করে অনুনয় করছেন। তবে তাঁর অনুনয়ে হাসি ঠাট্টা করছেন চার যুবক।

এ ঘটনায় সোমবার রাতে ওই নারী বাদী হয়ে কানাইঘাট থানায় চারজনকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ও পর্নোগ্রাফী আইনে মামলা দায়ের করেছেন।

মামলার আসামিরা হলেন একই গ্রামের, আব্দুল্লাহ (৩৮), আব্দুল্লাহ (২৭), জব্বার (২২), সাইদুল্লাহ (২৭)। তবে তাদের বাবার নাম জানাতে চাননি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।

মলার বিষয়টি নিশ্চিত করে কানাইঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজুল ইসলাম জানান, ওই নারীর স্বামী মারা গেছেন। তাঁর চার সন্তানের মধ্যে দুই ছেলে দুবাই প্রবাসী, আর দুই মেয়েকে বিয়ে দিয়ে দিয়েছেন। বাড়িতে থাকতেন একা। এ সুযোগে ওই নারীর উপর ভয়ঙ্কর নির্যাতন চালায় প্রতিবেশী চার যুবক। রাতে ঘরের দরজা ভেঙ্গে প্রবেশ করে তাঁর শ্লীলতাহানি করে ভিডিও ধারণ করে সেই ভিডিও প্রবাসী ছেলেদের কাছে পাঠিয়ে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে তারা। মূলত ছেলেদের কাছ থেকে টাকা নিতেই তারা এটা করেছে। তাদের ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে।

এদিকে নারীর এক আত্মীয় জানান, প্রবাসে থাকা দুই ছেলে ভিডিও ধারণকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে কিছু টাকাপয়সা দিয়ে সম্পূর্ণ ভিডিও উদ্ধার করার জন্য বলেছিলেন। এরপর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও তাঁরা জানিয়েছেন। এ বিষয়ে একটি সালিস বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে ভিডিও ধারণকারীদের চার লাখ টাকা দেওয়ার ফয়সালা করে অগ্রিম এক লাখ টাকা দেওয়া হয়। গত শনিবার এ টাকা দেওয়ার কথা ছিল। টাকা না দেওয়ার এক দিন পর ভিডিওটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার খবর পান তাঁরা।

অপরদিকে সালিশ বৈঠককারী কাউকে মামলায় আসামি করা হবে কি না জানতে চাইলে কানাইঘাট থানার ওসি তাজুল ইসলাম বলেন, যারা সালিশ বৈঠক করেছিলেন তারা ওই নারীর আত্মীয়। নারীর ছেলেদের অনুরোধে তারা চেষ্টা করেছিলেন টাকার বিনিময় ভিডিওটি উদ্ধার করার। তাই সালিশকারীদের বিরুদ্ধে নারীর কোন অভিযোগ নেই।