ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক: ১০ মাসে সড়কে নিহত ২৮ জন

ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক: ১০ মাসে সড়কে নিহত ২৮ জন

ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের আশুগঞ্জে গত বুধবার সন্ধ্যায় বাস, ট্রাক ও মোটরসাইকেলের ত্রিমুখী সংঘর্ষে নিহত হন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইজাজুল হক জিসান। আহত হয়েছেন দু'জন। এ ঘটনার দু'দিন আগে বিজয়নগর উপজেলার শ্বশই এলাকায় মাইক্রোবাসের চাপায় নিহত হন সুমন গোস্বামী ও মোহন বণিক নামে অটোরিকশার দুই যাত্রী। চলতি মাসের প্রথম দিন পিকআপের চাপায় প্রাণ হারান সোনালী ব্যাংকের কর্মকর্তা মোটরসাইকেল আরোহী ইমতিয়াজ আপন।

অক্টোবরের ৬ তারিখ পর্যন্ত তিনটি দুর্ঘটনায় চারজন নিহত হলেও গত ১০ মাসে মহাসড়কের আশুগঞ্জ-বিজয়নগর এলাকায় নিহত হয়েছেন ২৮ জন। গত বছর এ সংখ্যা ছিল অর্ধশতাধিক।

হাইওয়ে পুলিশ ও সংশ্নিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এ মহাসড়কের আশুগঞ্জ থেকে বিজয়নগর উপজেলার ৩৫ কিলোমিটার। চলতি বছর বিজয়নগর উপজেলার শ্বশই, বুধন্তী, শাহবাজপুর এলাকায় ১২টি, সরাইল উপজেলার কুট্টাপাড়া, বাড়িউড়া, বিশ্বরোড এলাকায় ৪টি এবং আশুগঞ্জ উপজেলার খড়িয়ালা, সোহাগপুর ও সোনারামপুর এলাকায় ৩টি দুর্ঘটনায় ২৮ জনের প্রাণহানি এবং অর্ধশত ব্যক্তি আহত হয়েছেন।

সংশ্নিষ্টদের মতে, অবৈধ ও ফিটনেসবিহীন যানবাহন ও বেপরোয়া গতি, ট্রাফিক আইন লঙ্ঘন, যত্রতত্র যানবাহন পার্কিং, যাত্রী ওঠানামা, অটোরিকশা স্ট্যান্ড, অদক্ষ ও লাইসেন্সবিহীন চালক, অবৈধ ওভারটেকিংয়ে ঘটছে দুর্ঘটনা। মহাসড়কের নির্ধারিত ৬টি স্থানে নির্মাণ ত্রুটি, রোড মার্কিং না থাকা, অবৈধ স্থাপনা ও বাজারও দুর্ঘটনার কারণ।

যানবাহনের তুলনায় রাস্তার স্বল্পতার বিষয়টি উল্লেখ করে জেলা লোকাল বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. নেয়ামত হোসেন বলেন, অটোরিকশা, ট্রলি দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ।

মহাসড়কের অবৈধ যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হলে ৮০ ভাগ দুর্ঘটনা কমে যাবে মনে করেন জেলা ট্রাকচালক ইউনিয়নের সভাপতি মো. ইদন মিয়া মিন্টু। তিনি বলেন, রাস্তা অনুপাতে যানবাহনের সংখ্যা বেশি। নিষিদ্ধ অটোরিকশা চলছে। এসব অটোরিকশা চালকের প্রশিক্ষণ নেই।

দুর্ঘটনা প্রতিরোধে পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের সঙ্গে যৌথ আলোচনা ও সচেতনতামূলক কর্মসূচির ব্যাপক প্রচারণার বিষয়ে প্রশাসনের জোরালো ও ধারাবাহিক কর্মসূচির দাবি জানিয়েছেন আশুগঞ্জ উপজেলা সুশাসনের জন্য নাগরিকের সভাপতি মিজানুর রহমান ও রওশন আরা জলিল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রেজাউল আজাদ।

জেলা সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী পংকজ ভৌমিক বলেন, প্রায়ই জেলা প্রশাসনের সহায়তায় অবৈধ বাজার-স্থাপনা উচ্ছেদসহ অভিযান চালনো হয়। মহাসড়ক ৪ লেনে উন্নীত হচ্ছে। সংশ্নিষ্ট সবাইকে আরও সচেতন হতে হবে। অনথ্যায় দুর্ঘটনা কমানো কঠিন হবে।

বিশ্বরোড খাটিখাতা হাইওয়ে থানার ওসি সুখেন্দ্র বসু বলেন, হাইওয়ে পুলিশ প্রতিদিন অবৈধ ও বেপরোয়া গতির কারণে মামলাসহ জরিমানা করছে।