নতুন বই পায়নি সুনামগঞ্জের পাঁচ উপজেলার শিক্ষার্থীরা

নতুন বই পায়নি সুনামগঞ্জের পাঁচ উপজেলার শিক্ষার্থীরা

করোনা মহামারির কারণে বন্ধ থাকার দুই বছর পর মাধ্যমিক ও প্রাথমিক স্কুলগুলোতে পালিত হয়েছে বই উৎসব। তবে এ বছর চাহিদার তুলনায় সুনামগঞ্জে বই কম আসায় পাঠ্যক্রম অনুযায়ী সব বই হাতে পায়নি শিক্ষার্থীরা। এছাড়া জেলার পাঁচ উপজেলায় কোনো বই পাঠাতে পারেনি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। পাশের উপজেলা থেকে ধারে বই এনে পালন করা হয়েছে উৎসব।

আর যে সব উপজেলায় বই পৌঁছেছে সেখানেও প্রাথমিকের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির অনেক বিষয়ের পাঠ্যবই শিক্ষার্থীরা হাতে পায়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।

রোববার সকাল ৯টায় সুনামগঞ্জের সরকারি এসসি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে জাতীয় পাঠ্যপুস্তক দিবস-২০২৩ এর শুভ সূচনা করেন সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মাকসুদ চৌধুরী।

এসময় একে একে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেয়া হয় নতুন বই। আনুষ্ঠানিকতায় জেলার অধিকাংশ মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীরা বই পেলেও খালি হাতে ফিরেছে প্রাথমিকের শিক্ষার্থীরা। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা।

নতুন পাড়ার বাসিন্দা রতন দাস বলেন, ‘আজ নতুন বই দেবে, মেয়েকে নিয়ে এসে শুনি প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির কোনো বই পৌঁছেনি। কবে আসবে তাও জানাতে পারেননি সংশ্লিষ্টরা। মেয়েটা অনেক আশা নিয়ে এসেছিল, এখন খালি হাতেই ফিরে যেতে হচ্ছে।’

একই অভিযোগ পারভীন বেগমের। তিনি বলেন, ‘নতুন বই নেয়ার জন্য ছেলে অপেক্ষা করেছিল। কিন্তু সকালে বই নিতে এলে মাত্র একটি বই তার হাতে দেয়া হয়। বাকিগুলো পরে দেয়া হবে বলে বিদায় জানানো হয়। উৎসবের মধ্যে এমন হাতাশা আসা করিনি।’

অন্যদিকে সুনামগঞ্জ সদর, তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর, ছাতক ও দোয়ারাবাজার উপজেলায় কোনো বই পাঠাতে পারেনি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। উৎসব পালনের জন্য পাশের উপজেলা থেকে ধার করে বই আনা হয়।

সুনামগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এস এম আব্দুর রহমান বলেন, ‘যতটুুকু জানি কাগজ সরবরাহের ঘাটতি থাকায় যথাসময়ে বই ছাপতে দেরি হওয়ার কারণে আমরা চাহিদা মতো বই পাইনি। চাহিদার ৩৫ শতাংশ বই এসেছে সুনামগঞ্জে।

এর মধ্যে পাঁচটি উপজেলার জন্য কোনো বই আসেনি। বই উৎসব পালনের জন্য অন্য উপজেলা থেকে বই আনা হয়েছে। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির কোনো বই এখনও সুনামগঞ্জে আসেনি। বিষয়টি জানানো হয়েছে। আশা করছি চলতি মাসেই সব বই চলে আসবে।’

সুনামগঞ্জের জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘প্রাথমিকে বইয়ের ঘাটতি থাকলেও মাধ্যমিকে অতটা নেই, আমরা ৭০ শতাংশ বই পেয়েছি। জেলার সব বিদ্যালয়ে তা পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।’

তবে কিছু বিষয়ের বই আসেনি, যা আগামী সপ্তাহের মধ্যে এসে পৌঁছাবে বলে জানান তিনি।