বিবাহ বিচ্ছেদের জন্য ৫০ কোটি ডলার গুনতে হবে আমিরাতের প্রধানমন্ত্রীকে

বিবাহ বিচ্ছেদের জন্য  ৫০ কোটি ডলার গুনতে হবে আমিরাতের প্রধানমন্ত্রীকে

দুবাইয়ের শাসককে তার সাবেক স্ত্রী প্রিন্সেস হায়া ও দুই সন্তানকে ৫০ কোটি ডলারের বেশি অর্থ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন যুক্তরাজ্যের উচ্চ আদালত। এ সময় হায়া ও তার সন্তাদের নিরাপত্তার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। খবর দ্য গার্ডিয়ান।

বিচারপতি মুর এই রায় দিয়েছেন। লিখিত রায়ে তিনি বলেন, হায়া ও তার সন্তানদের ‘বিশেষ উপায়ে’ হুমকি দিয়েছেন শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল-মাকতুম। তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রধানমন্ত্রী এবং যুক্তরাজ্যের ঘনিষ্ঠ মিত্রও।

রায়ে বলা হয়— ১. প্রিন্সেস লতিফা এবং প্রিন্সেস শামসাসহ দুই সন্তানকে অপহরণের পরিকল্পনা করেছিলেন শেখ মোহাম্মদ। পরে কেমব্রিজের সড়ক থেকেও তাদের অপহরণের চেষ্টা করা হয়- এভাবে প্রিন্সেস হায়াকে ভয় দেখানো হয়। ২. এনএসও গ্রুপের মাধ্যমে পেগাসাস স্পাইওয়্যার ব্যবহার করে হায়া এবং তার দুই আইনজীবীসহ তার পাঁচ সহযোগীর ফোন হ্যাক করেছিলেন দুবাইয়ের শাসক, যখন হায়া আদালতের কার্যক্রম নিয়ে ব্যস্ত ছিল। ৩. দুবাইয়ের শাসকের এজেন্টরা হায়ার বাড়ির পাশে একটি বাড়ি ক্রয়ের চেষ্টা করে, যা তার (হায়া) নিরাপত্তার জন্য হুমকি তৈরি করত।

পূর্বের রায়গুলোর উদ্ধৃতি দিয়ে বিচারপতি মুর বলেন, প্রিন্সেস হায়াকে ৩৩ কোটি ১০ লাখ ডলার দিতে হবে দুবাইয়ের শেখকে। আর বার্ষিক অর্থপ্রদানের জন্য ৩৮ কোটি ৪০ লাখ ডলার ব্যাংক গ্যারান্টি দিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, বর্তমান অবস্থা, এই ধরনের সন্ত্রাসী আক্রমণ এবং অপহরণের মতো ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে হায়া ও তার সন্তানদের যেকোনো পরিস্থিতিতে তাদের নিরাপত্তা দেওয়ার প্রয়োজন হবে। তারা বিশেষভাবে দুর্বল, তাই এই দেশে তাদের জন্য কঠোর নিরাপত্তার প্রায়োজন রয়েছে।

এ বিষয়ে শেখ মোহাম্মদের একজন মুখপাত্র বলেন, তার সন্তানদের জন্য যা যা দরকার তিনি তা সরবরাহ করতেন। এখন আদালত আর্থিক বিষয়ে তার রায় দিয়েছেন। তাই এ বিষয়ে আর মন্তব্য করতে চাই না।

একইসঙ্গে তিনি অনুরোধ করেন, ‘সংবাদমাধ্যম তার সন্তানদের গোপনীয়তাকে সম্মান করবে এবং যুক্তরাজ্যে তাদের জীবনে হস্তক্ষেপ করবে না।’

এর আগে ২০১৯ সালের এপ্রিলে দুই সন্তানসহ ব্রিটেনে পালিয়ে যান প্রিন্সেস হায়া। এরপর থেকে তাকে একাধিকবার আক্রমণ করা, জেলের হুমকি দেওয়া ও আর্থিক সহায়তার জন্য আইনি লড়াইয়ের জন্য প্রায় সাত কোটি ডলার খরচ করেছেন। এ মামলায় উচ্চ আদালতের বিচারকরা সম্ভাব্য ভারসাম্যপূর্ণ রায় খুঁজে পান।