বিয়ানীবাজারের শেওলা স্থলবন্দরে পাথর ভাঙার মেশিনে বিপর্যস্ত পরিবেশ

বিয়ানীবাজারের শেওলা স্থলবন্দরে পাথর ভাঙার মেশিনে বিপর্যস্ত পরিবেশ

বিয়ানীবাজার উপজেলার শেওলা স্থলবন্দরে অনুমোদন ছাড়াই অবৈধভাবে চলছে প্রায় ৭০টি পাথর ভাঙার মেশিন (স্টোন ক্রাশার)। নদীর তীর, মানুষের ঘরবাড়ি, সড়কের আশপাশ, ধর্মীয় ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাশে এগুলো স্থাপন করা হয়েছে। যত্রতত্র এগুলো স্থাপন করায় মারাত্মক শব্দ দূষণের পাশাপাশি ক্ষতি হচ্ছে প্রকৃতি, পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের।

বন্দরে যাতায়াতের একমাত্র সড়কের দু’পাশে পাথর ক্রাসিং মেশিনের শব্দ ও ধুলায় রাস্থা পারাপারে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে পথচারীদের। ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের তথ্য মতে, প্রতিদিন এ বন্দর দিয়ে গড়ে ২শ’ থেকে আড়াইশ’ যাত্রী পারাপার হন। স্থলবন্দরের সড়কের দু’পাশে উন্মুক্তভাবে পাথর ক্রাসিং মেশিন বসিয়ে লোড-আনলোড, নেটিং ও ক্রাসিং করে আসছে এলসি পাথর ব্যবসায়ীরা। তারা সরকারি জায়গায় কিংবা সড়কের ওপরেই খোলামেলাভাবে পাথর ক্রাসিং ও লোড-আনলোড করায় পাথর ক্রাসিং মেশিনের ধুলাবালি ও প্রচণ্ড শব্দে এলাকাবাসীসহ সড়কটিতে দেশি-বিদেশি যাত্রীদের চরম ভোগান্তিতে ফেলেছে।

বেলার পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, এসব মেশিনের কারণে এলাকায় বায়ু, মাটি, পানি ও শব্দ দূষণ হচ্ছে। এ কারণে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে শিক্ষা কার্যক্রম, আর্থসামাজিক, কৃষির উপর। এসব মেশিন স্থাপনের জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন বা লাইসেন্স, পরিবেশের ছাড়পত্র নেয়ার কথা থাকলেও এসব নেয়া হয়নি।

স্থান নির্ধারণে একটি কমিটি থাকলেও এসব কমিটির কোনো কার্যক্রম নেই।  জানা যায়, সিলেটের ৫ উপজেলায় পরিবেশগত ছাড়পত্র গ্রহণ ব্যতীত অবৈধ ও অনিয়ন্ত্রিতভাবে পরিচালিত সকল পাথর ভাঙার (স্টোন ক্র্যাশার) মেশিনের কার্যক্রম বন্ধ এবং উচ্ছেদের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ ছাড়া স্টোন ক্রাশিং মেশিন স্থাপন নীতিমালা-২০০৬ এর পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অথচ আদালতের আদেশ কিংবা নীতিমালা মানতে নারাজ পাথর সংশ্লিষ্টরা।

স্থানীয়ভাবে জানা যায়, ওই এলাকায় সরকারি জমি পাথর ভাঙার মেশিন বসানোর কাজে ভাড়া দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে একটি অসাধু চক্র। প্রায় মাস দু’য়েক পূর্বে সরকারি জমি দখল-পাল্টা দখল এবং ভাড়া দেয়া নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। বিয়ানীবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিজ আফসানা তাসলিম জানান, অবৈধ মেশিন বসানোর বিষয়ে খোঁজ নেয়া হবে। প্রয়োজনে অভিযান চালিয়ে অবৈধ মেশিনগুলো গুঁড়িয়ে দেয়া হবে।