শঙ্কা নিয়ে বিএনপির গণসমাবেশের শেষ প্রস্তুতি

শঙ্কা নিয়ে বিএনপির গণসমাবেশের শেষ প্রস্তুতি

সিলেটে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে শনিবার (১৯ নভেম্বর)। সিলেট মহানগরের ঐতিহাসিক আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে শনিবার দুপুরে এ সমাবেশ শুরু হবে।

বুধবার (১৬ নভেম্বর) আলিয়া মাদরাসা মাঠে গিয়ে দেখা যায়- মঞ্চ তৈরির কাজ চলছে। তৈরি হচ্ছে ৭০ ফুট লম্বা ৩০ ফুট প্রশস্ত মঞ্চ। সিলেটে পরিবহন ধর্মঘটের শঙ্কা থাকা সত্ত্বেও পুরোদমে চলছে গণসমাবেশের প্রস্তুতি। শুক্রবারের মধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হবে বলে জানিয়েছে বিএনপি সূত্র। 

তবে সিলেটে এখনও পর্যন্ত পরিবহন ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত নেই বলে জানিয়েছেন জেলা বাস-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ।

এদিকে, সমাবেশকে বানচাল করতে আওয়ামী লীগ ও পুলিশ একসঙ্গে কাজ করছে অভিযোগ করে স্থানীয় বিএনপি নেতৃবৃন্দ বলেন- হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজারের পর মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর) ওসমানীনগরে বিএনপির কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা তাহসিনা রুশদীর লুনার গাড়ি বহরে পুলিশের উপস্থিতিতে হামলা হয়েছে। নেতাকর্মীরা আহত হয়েছেন। ওই খান থেকে আমাদের দুজন নেতাকে আটক করেছে পুলিশ।

এছাড়া যতগুলো বিভাগে বিএনপি গণসমাবেশ করেছে সবগুলোতে আগে থেকে সরকারের নির্দেশে পরিবহন ধর্মঘট ডাকা হয়েছে। সিলেটেও এমনটি হতে পারে এমন আশঙ্কা করছেন তারা। তবে কোনো বাধাই আমাদের সমাবেশে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পরবে না। সমাবেশ সফল করতে এককাট্টা হয়ে কাজ করছেন বলে নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন। 

বিএনপি নেতারা বলছেন, সব বাধা ডিঙিয়ে ১৯ নভেম্বর সিলেটের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় গণসমাবেশ করবেন তারা। সাড়ে চার লক্ষাধিক মানুষের সমাগম ঘটানোর লক্ষ্য নিয়ে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন। অন্য বিভাগের মতো সিলেটেও পরিবহন ধর্মঘট ডাকা হলে আগে আসা নেতাকর্মীদের থাকার জন্য নগরের প্রায় সবগুলো কমিউনিটি সেন্টার বুকিং দেওয়া হয়েছে।

সিলেট নগরের সেবাহানিঘাট এলাকার আগ্রা, মানিকপীর রোডের মালঞ্চ, সাপ্লাই এলাকার নুরে আলা, পাঠানটুলা এলাকার সাজিদ আলীসহ অন্তত আটটি কমিউনিটি সেন্টারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সবগুলোই ১৮ নভেম্বর রাতের জন্য ভাড়া হয়ে গেছে। বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর পক্ষে এগুলো বুকিং দেওয়া হয়েছে।

সিলেট জেলা বিএনপির এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর পক্ষ থেকে নগরের অন্তত ২৫টি কমিউনিটি সেন্টার ১৮ নভেম্বর রাতের জন্য বুকিং নেওয়া হয়েছে। সেখানেই কর্মীদের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা হচ্ছে। এ ছাড়া নগরের খোলা মাঠগুলোতেও কর্মী-সমর্থকদের রাত যাপনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী বলেন, এ পর্যন্ত যতগুলো বিভাগে বিএনপি গণসমাবেশ করেছে সবগুলোতে আগে থেকে সরকারের নির্দেশে পরিবহন ধর্মঘট ডাকা হয়েছে। সিলেটেও এমনটি হতে পারে এমন আশঙ্কা করছি। তবে কোনো বাধাই আমাদের সমাবেশে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পরবে না।

এদিকে সিলেটে বিএনপির সমাবেশের আগে পরিবহন ধর্মঘট ডাকা নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এ বিষয়ে সোমবার ঢাকায় সিলেটের পরিবহন শ্রমিক সংগঠনগুলোর নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাহজাহান খান।

বৈঠক শেষে সিলেট জেলা বাস-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. মইনুল ইসলাম বলেন, ‘সিলেটে ধর্মঘটের কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আমরা বিএনপির গণসমাবেশের সময়ও গাড়ি স্বাভাবিকভাবে চলাচলের পক্ষে।’

বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আবদুল মুক্তাদির বলেন, আমাদের সমাবেশ বানচাল করতে নানাভাবে আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে। এসব বাধা ডিঙিয়ে আমরা সমাবেশে গণজোয়ার সৃষ্টি করবো।

সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, সমাবেশকে বানচাল করতে আওয়ামী লীগ ও পুলিশ একসঙ্গে কাজ করছে। মঙ্গলবার ওসমানীনগরে আমাদের দলের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা তাহসিনা রুশদীর লুনার গাড়ি বহরে পুলিশের উপস্থিতিতে হামলা হয়েছে। নেতাকর্মীরা আহত হয়েছেন। ওই খান থেকে আমাদের দুজন নেতাকে আটক করেছে পুলিশ।