সিলেটে চা খাওয়ার আমন্ত্রণে অপহরণ চেষ্টা

সিলেটে চা খাওয়ার আমন্ত্রণে অপহরণ চেষ্টা

সিলেট নগরীর আম্বরখানায় চা খাওয়ার কথা বলে ডেকে নিয়ে সিলেট বিভাগ গণদাবি পরিষদের এক নেতাকে অপহরণ চেষ্টা ও শারিরিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় তিনি থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। তবে পুলিশের তদন্তে ধীরগতি ও অভিযুক্তদের অব্যাহত হুমকির কারণে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন তিনি। 

শনিবার (১৬ এপ্রিল) সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন আম্বরখানা বড়বাজার এলাকার বাসিন্দা ও সিলেট বিভাগ গণদাবি পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. রুহুল ইসলাম মিঠু। তিনি বঙ্গবন্ধু লেখক সাংবাদিক ফোরাম ইউকে’র সিলেট জেলা শাখার সভাপতি ও সাপ্তাহিক বৈচিত্রময় সিলেটের বার্তা সম্পাদক। 

অপহরণ চেষ্টা ও শারিরিক নির্যাতনের ঘটনায় গত সোমবার (১১ এপ্রিল) তিনি রাজু, সম্রাট, সাকিল ও সাদেক নামে চারজনের নাম উল্লেখ করে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন মো. রুহুল ইসলাম মিঠু। অভিযোগে আরও ৫-৬জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। অভিযুক্তরা আম্বরখানা এলাকার ছাত্রলীগ কর্মী বলে দাবি করেন তিনি। 

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে রুহুল ইসলাম বলেন, ‘গত রোববার (১০এপ্রিল) রাত সাড়ে ১১টার দিকে আম্বরখানা বাজার এলাকার ফুটপাতের পান দোকানী সাদেক নামে এক যুবক কৌশলে চা খেতে আম্বরখানাস্থ হোটেল হিমেল গলির ভিতরে একটি টি স্টলে নিয়ে যায়। সেখানে দু’জন দাড়িয়ে চা খাওয়া শেষ হতেই আকস্মিকভাবে তিন যুবক এসে আমার গতিরোধ করে দাড়ায়। এরপর রনি নামক এক যুবক পাঁচশত টাকা নোটের একটি বান্ডেল আমার পকেটে ঢুকানোর চেষ্টা করে। এতে প্রতিবাদ করলে সাদেক, রনি, সাকিল, রাজু, সম্রাটসহ অজ্ঞাত কয়েকজন যুবক মারধর শুরু করে। এতে আতঙ্কিত হয়ে আশেপাশের মানুষ চলে যায়। পরে উশৃঙ্খল যুবকরা আম্বরখানা মূল সড়কে এনে একটি গাড়িতে তুলে আমাকে অপহরণের চেষ্টা করে।’

রুহুল ইসলাম বলেন, ‘অপহরণের চেষ্টার সময় আমি চিৎকার শুরু করি। এসময় তারা কোতোয়ালী মডেল থানাধীন শাহজালাল (রহ.) পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশকে এবং এক অনলাইন পোর্টালের সাংবাদিককে ফোন দেয়। তাৎক্ষণিক পুলিশ ও কথিত অনলাইন পোর্টালের সাংবাদিক ঘটনাস্থলে যায়। পরে পুলিশ কর্মকর্তা একটি সাদা কাগজে অপহরণ চেষ্টাকারী সাদেককে বাদী ও আরেক যুবক শাকিলকে সাক্ষী বানিয়ে আমার পরিচয় লিখে থানায় নিয়ে যেতে চান। পরে ঘটনাস্থলে থাকা এক মানবাধিকার কর্মীর চাপে ওই পুলিশ কর্মকর্তা ও কথিত সাংবাদিক আমাকে আম্বরখানার একটি হোটেলে বসে বিষয়টি মীমাংসা করার প্রস্তাব দেন। পুলিশের উপস্থিতিতে ওই হোটেলে অভিযুক্তদের নিয়ে তাৎক্ষণিক মিমাংসা করা দেওয়া হয়। 

সংবাদ সম্মেলনে রুহুল বলেন, ঘটনার পরদিন কোতোয়ালি মডেল থানায় চারজনের নাম উল্লেখসহ আরও ৫-৬জনকে বিবাদী করে একটি লিখিত অভিযোগ দেই। অভিযোগটির প্রাথমিক তদন্তভার শাহজালাল (রহ.) পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের কর্মকর্তা কাজী জামালকে দেওয়া হয়েছে। 

তিনি বলেন, ‘হোটেল হিমেল গলিতে আরও একাধিক ঘটনা ঘটেছে। অপরাধীদের সাথে পুলিশের একটি যোগসূত্র রয়েছে। আল আমিন ও সাদেক নামে দুই যুবক আম্বরখানায় পুলিশের সোর্স হিসেবে ফুটপাত থেকে চাঁদা তুলে। তারাই মানুষকে জিম্মি করে। আমার ঘটনার পরপরই তাদের ফোনে শাহজালাল (রহঃ) পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে উল্টো আমাকে থানায় নিয়ে আসতে বলে। তাই আমার অভিযোগের তদন্ত নিরপেক্ষ হবে কী না তা সন্দিহান। 

রুহুল ইসলাম আরও বলেন, ‘আমার ঘটনাটি সম্পূর্ণ পরিকিল্পিত। আমার ভাই নজরুল ইসলাম শিপারের সাথে পারিবারিকভাবে দ্বন্দ্ব চলছে। একাধিক মামলাও চলছে। তিনি আমাদেরকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়া এ ঘটনার পর অভিযুক্তরা মুঠোফোনে আমাকেসহ আমার স্বজনদের হত্যা ও গুম করার হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। এই ঘটনার মূল ইন্দন দাতা কে? কারা এটার সাথে জড়িত। এ বিষয়টি সঠিক তদন্ত করলে বেরিয়ে আসবে। ঘটনার রহস্য উদঘাটন করে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে তিনি সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতা কামনা করেন। 

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন রুহুল ইসলামের বড় বোন সিলেট জেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক তাসমীহ বিনতে স্বর্না, আরেক বোন লুৎফা বেগম ও খালাতো ভাই জাবেদ আহমদ।