সিলেটে দুর্গতদের পাশে সাধারণ মানুষ

সিলেটে দুর্গতদের পাশে সাধারণ মানুষ

শত বছরের মাঝেও এমন ভয়াবহ বন্যা দেখেননি সিলেটের মানুষ। ১৯৮৮ কিংবা ২০০৪ সালের বন্যায়ও একসাথে পুরো জেলা ডুবেনি। একসাথে এতো মানুষকে দুর্যোগের মুখোমুখি হতে হয়নি। এবারের প্রলংয়কারী বন্যা রেকর্ড ভেঙ্গেছে অতীতের সকল দুর্যোগের। ভয়াবহ এই বন্যায় পানিবন্দি মানুষের মধ্যে একদিকে চলছে উদ্ধারের জন্য আর্তনাদ, অন্যদিকে খাবারের জন্য হাহাকার। এই অবস্থায় সরকারি ত্রাণের পাশাপাশি বানভাসি মানুষের দিকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন সাধারণ মানুষও। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তারা প্রতিদিনই ছুটছেন দুর্গতদের পাশে। ত্রাণ হিসেবে শুকনো ও রান্না করা খাবার দেওয়ার পাশাপাশি পানিবন্দি মানুষদের উদ্ধার করে নিয়ে আসছেন। আশ্রয়ের জন্য সিলেট নগরীর অনেকেই নিজেদের বাসা উন্মুক্ত করে দিয়েছেন। 

পানিবন্দি মানুষের কাছে পৌঁছাতে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে যোগাযোগ মাধ্যম। সকল রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে নৌকা। কিন্তু ইঞ্জিন নৌকার বেশিরভাগ মালিকরা মানুষের এই অসহায়ত্বকে পুঁজি করে দুর্যোগের এই সময়ে ‘ডাকাত’র ভ‚মিকায় অবর্তীণ হয়েছেন। আগে যেখানে ৫শ’ থেকে ১ হাজার টাকা ভাড়া ছিল, সেখানে ইঞ্জিন নৌকার মাঝিরা ভাড়া হাঁকছেন ২০ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকা। কেউ কেউ সুযোগ বুঝে ভাড়া হাঁকছেন ৫০ হাজার টাকাও। ফলে সাধারণ মানুষ ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলো ত্রাণ নিয়ে দুর্গত মানুষের কাছে পৌঁছাতে বেগ পেতে হচ্ছে। বৈঠাচালিত ছোট নৌকা দিয়ে দুর্গত এলাকায় যাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় ত্রাণ দিতে যাওয়া লোকজনকে বাধ্য হয়েই বাড়তি ভাড়া গুনতে হচ্ছে। সিলেট নগরীতেও একই অবস্থা। বন্যাকবলিত এলাকায় নৌকার মাঝিরা ‘গলা কাটছেন’। 

সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান জানিয়েছেন, নৌকার মাঝিরা অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ তিনি পেয়েছেন। কিন্তু এলাকাগুলো দুর্গম হওয়ায় মাঝিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে তাদের কাছে পৌঁছানো কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে এসব মাঝিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য তালিকা করা হচ্ছে। এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।