'সেভিংস পকেটে রাখেন, খরচ কইরেন না'

'সেভিংস পকেটে রাখেন, খরচ কইরেন না'

'শ্রীলংকা বিপদে আছে। আমরা কিন্তু তেমন বিপদে নেই। সে ধরনের বিপদের সম্ভাবনাও নেই। নেপাল বিপদে আছে। তারা তাদের দেশের বাইরে যারা আছেন তাদের মেসেজ দিচ্ছে যে, দয়া করে পয়সা দেশে পাঠাও। আর আমাদের যারা বিদেশে আছেন তারা এমনিতেই অর্থ পাঠাচ্ছেন।'

‘কিন্তু আমরা যদি কমপ্লিসিট হয়ে যাই, যদি বলি আমি এদিকে যাব না বা আমার যাওয়ার দরকার নেই, আমি ইগো নিয়ে বসে থাকব- তাহলে দিনশেষে কী হবে? পত্রিকায় যা পড়ি এবং টিভিতে যা দেখি তাতে মনে হয় বিশ্ব অর্থনীতি ভালো অবস্থাতে নেই। এ অবস্থা থেকে যেটা আমাদের রক্ষা করতে পারে- তা হলো নিজের ঘরে পর্যাপ্ত থাকা বা সঞ্চয়। যাদের সেভিংস (সঞ্চয়) আছে তাদের বলব, সেভিংসগুলো পকেটে রাখেন খরচ কইরেন না।’

নিরাপদ অভিবাসন বিষয়ে অংশীজনদের সঙ্গে মতবিনিময় ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠানে শ্রমশক্তি রপ্তানি ও রেমিট্যান্স প্রসঙ্গে আলোচনার সময় এসব কথা বলেন প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ। 

বুধবার রাজধানীর অ্যাবাকাস কনভেনশন সেন্টারে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন তিনি। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন। 

আলোচনায় অংশ নেন অভিবাসন-বিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠান রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্ট রিসার্চ ইউনিটের (রামরু) অধ্যাপক সিআর আবরার, ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ, ব্র্যাকের মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের প্রধান শরীফুল হাসানসহ অভিবাসন খাত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা।

মন্ত্রী বলেন, এখনো অনেক বিষয়ে আমাদের কাছে পর্যাপ্ত ডাটা নেই। যেমন দেশে ফেরত আসা প্রবাসী কর্মীর সংখ্যা। কোভিড ঘিরে দেশে শ্রমিকদের ফেরার ঢল নেমেছিল। এ অবস্থার মধ্যেও রেমিট্যান্সে সেই অর্থে প্রভাব পড়েনি। কারণ যারা ফিরেছেন তারা সব নিয়ে ফিরেছেন। এখন আবার যারা যাচ্ছেন তারাও রেমিট্যান্স পাঠাবেন। সাধারণত শুরুতে কিছু সঞ্চয় করে তারা পাঠানো শুরু করেন। 

তিনি বলেন, তিন বছর হয়ে গেছে আমরা তাদের পেছনে ঘুরছি। এজন্য আমাদের সব ধরনের চেষ্টা অব্যাহত আছে।

সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন বলেন, আমরা প্রবাসে শ্রমিক পাঠানোর ক্ষেত্রে এখন শুধু সংখ্যা দিয়ে নয়, যোগ্যতা নিশ্চিত করছি। আমরা তাদের মানবসম্পদ হিসাবে গড়ে তুলছি। চলতি বছরেও রেকর্ডসংখ্যক মানুষ দেশের বাইরে গেছেন। এ ধারা আমরা অব্যাহত রাখতে চাই।

অধ্যাপক সিআর আবরার বলেন, বৈদেশিক শ্রমবাজার ক্রমশই প্রতিযোগিতামূলক হচ্ছে। বিভিন্ন দেশ তাদের শ্রমশক্তিকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করছে। এ অবস্থায় দক্ষ শ্রমশক্তি গড়ে তোলার বিকল্প নেই। 

হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়কে দুই পয়সার বাজেটের মন্ত্রণালয় বলা হয়। আগামী বাজেটে এ মন্ত্রণালয়ে বরাদ্দ বাড়াতে হবে। তিনি বলেন, অনেক সেক্টরে প্রশিক্ষিত কর্মী পাওয়া যায় না। সেজন্য দক্ষ শ্রমিক তৈরিতে মনোযোগী হতে হবে। 

ব্র্যাকের শরীফুল হাসান বিদেশে শ্রমশক্তি প্রেরণের সব জায়গাগুলোতে ডিজিটালাইজেশনের প্রতি গুরুত্বারোপ করেন।