হবিগঞ্জে চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে ‘সংঘবদ্ধ ধর্ষণ’

হবিগঞ্জে চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে ‘সংঘবদ্ধ ধর্ষণ’

হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার ইনতাগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বজলুর রশিদ ও তার দুই সহযোগির বিরুদ্ধে এক তরুণীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে।

এ ঘটনায় নির্যাতিতা তরুণীর মা সোমবার (১৯ জুলাই) হবিগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এ অভিযোগ দায়ের করেছেন। বিজ্ঞ বিচারক মোহাম্মদ হালিম উল্লাহ চৌধুরী দীর্ঘ শুনানী শেষে অভিযোগটি আমলে নিয়ে ৩ দিনের মধ্যে এফআইআর গণ্যে মামলা রুজু করতে নবীগঞ্জ থানার ওসিকে নির্দেশ দেন।

অভিযোগে চেয়ারম্যান বজলুর রশীদ ছাড়াও তার দুই সহযোগী উপজেলার পিরিজপুর গ্রামের রিয়াজ উদ্দিনের ছেলে অজুদ মিয়া ও আব্দুল জলিলের ছেলে রিপন মিয়াকে অভিযুক্ত করা হয়।

মামলায় উল্লেখ করা হয়, নবীগঞ্জ উপজেলার ওমরপুর গ্রামের এক নারী তার স্বামীর সাথে বনিবনা না থাকায় উপজেলার ইনাতগঞ্জ বাজারে তার ১৯ বছরের মেয়েকে নিয়ে ভাড়া বাসায় বসবাস করছেন। বিষয়টি নজরে আসে ইনাতগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বজলুর রশিদের।

গত ২৫ জুন বিকেলে ওই নারী নবীগঞ্জে ডাক্তার দেখাতে রওয়ানা হলে রাস্তায় চেয়ারম্যান বজলুর রশিদের সাথে দেখা হয়। এদিন রাতে ওই তরুণী বাসায় একা থাকার সুবাধে বজলুর রশিদ ও তার দুই সহযোগী জোরপূর্ব ঘরে প্রবেশ করে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তরুণীকে ধর্ষণ করে। পরে তরুণীর মা বাসায় ফিরলে সে সব ঘটনা জানায়।

অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, ভিকটিমকে নিয়ে তার মা হাসপাতালে যেতে চাইলে ধর্ষণকারীরা তাকে বাঁধা দিয়ে প্রাণে হত্যার হুমকি দেয়। পরে ঘটনার তিনদিন পর কৌশলে লুকিয়ে ভিকটিমকে গত ২৮ জুন হবিগঞ্জ আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালে এনে ভর্তি করা হয়।

এদিকে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার জন্য চেয়ারম্যান বজলুর রহমান বিভিন্নভাবে চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। পরে সোমবার ভিকটিমের মা বাদী হয়ে হবিগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবু্যুনালে মামলা দায়ের করেন।

হবিগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এডভোকেট আবুল হাশেম মোল্লা মাসুম মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ডালিম আহমেদ বলেন, ‘মামলা দায়েরের বিষয়টি শুনেছেন। তবে এখন আমাদের কাছে আদালত থেকে কোন কাগজপত্র আসেনি। নির্দেশনা আসলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান বজলুর রশিদ বলেন, ‘সম্প্রতি ওই নারী তার স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করে। এ বিষয়টি নিয়ে এলাকার ময়মুরব্বিদের নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে সমাধানের উদ্যোগ নেয়া হয়। এ সময় সামাজিক উদ্যোগে হওয়া বিচার তার বিপক্ষে যাওয়ার কারণে তিনি আমার প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে এমন মিত্যা অভিযোগ দায়ের করেছেন। এছাড়া সামনে নির্বাচন হওয়ার কারণে আমার প্রতিপক্ষরাও তাকে ইন্ধন দিয়েছেন।’