‘অসহায়’ অধ্যক্ষ চাইলেন ‘রাজনৈতিক সহযোগিতা’

‘অসহায়’ অধ্যক্ষ চাইলেন  ‘রাজনৈতিক সহযোগিতা’
এমসি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক সালেহ আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত

সিলেটের বহুল আলোচিত এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে গণধর্ষণের ঘটনায় হাইকোর্ট কলেজের অধ্যক্ষ সালেহ আহমেদ ও হোস্টেল সুপার জীবন কৃষ্ণ আচার্যের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার সমন্বয়ে গঠিত ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ বুধবার (২ জুন) এ রায দেন।

এদিকে ধর্ষণ ঘটনার পর থেকে নানাভাবে নিজের 'অসহায়ত্বের কথা' বলে আসছে অধ্যক্ষ সালেহ আহমেদ। কলেজ টিলাগড়ে অবস্থানের কারণে স্থানীয় রাজনীতির গ্রুপিং, প্রভাব, প্রশ্রয় এসবের উদাহরণ টেনেও নিজেকে অসহায় বলে দাবি করেছেন নানা সময়ে।

এবার সালেহ আহমেদ 'ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের' সহযোগিতা দরকার বলে মন্তব্য করেছেন।

গণমাধ্যমে এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেছেন, রায়ের ব্যাপারে তাঁর নিজের কোনো ভাষ্য নেই। কর্তৃপক্ষ বিষয়টি দেখবেন।

তিনি বলছেন, 'ঘটনার পর থেকে সব কটি তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে গত আট মাস কাজ করেছি। ১০০টি সুপারিশ ছিল। এগুলো কার্যকর করেছি। এরমধ্যে ছাত্রাবাসের সীমানাপ্রাচীর উঁচু করে কাঁটাতারের বেড়া বসানো হয়েছে। হোস্টেল সুপার পরিবর্তন করেছি। নৈশপ্রহরী বরখাস্ত করা হয়েছে। ছাত্রাবাসে এখন নতুন চারজন সুপার নিয়োগ করা হয়েছে। বহিরাগত ব্যক্তিদের প্রবেশ বন্ধ করেছি।'

এছাড়াও হোস্টেলে রাজনৈতিক তৎপরতা বন্ধ রাখার নির্দেশনা আছে। কিন্তু এটা কার্যকর করতে হলে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের সহযোগিতা দরকার। এ বিষয়ে সব রাজনৈতিক দলের উদ্যোগও দরকার। কলেজ কর্তৃপক্ষ একা কিছু করতে পারবে না। –যোগ করেন অধ্যক্ষ সালেহ আহমদ।

প্রসঙ্গত- ২০২০ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় সিলেটের টিলাগড় এলাকার এমসি কলেজের গেটের সামনে থেকে ওই গৃহবধূকে তুলে নিয়ে যান ছাত্রলীগের কয়েকজন। ওই নারী তার স্বামীর সঙ্গে একটি গাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলেন। পরে ওই নারীকে কলেজের ছাত্রাবাসে দলবেঁধে ধর্ষণ করেন ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী ও কলেজের ছাত্র।

সংঘব্ধ এই ধর্ষণের ঘটনায় একে একে গ্রেফতার হন ছাত্রলীগের কর্মী হিসেবে পরিচিতি ছয়জন। ছাত্রাবাসের বাইরে থেকে সহযোগিতা করার অভিযোগে আরও দুই ছাত্রলীগ কর্মীকে গ্রেফতার করে র‌্যাব ও পুলিশ।

গ্রেফতার আটজন ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়ে ঘটনার দায় স্বীকার করেন। তাদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। মামলাটি এখন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন।

করোনার এই মহামারিকালে বন্ধ কলেজ ছাত্রাবাসে তরুণী গৃহবধূকে তুলে নিয়ে গণধর্ষণ ঘটনার পর থেকে নানা আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দেয়। কলেজ অধ্যক্ষ ও ছাত্রাবাসের হোস্টেল সুপারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আওয়ামী লীগ থেকে শুরু করে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও নাগরিক সংগঠন দাবি তোলে। পাশাপাশি কর্তৃপক্ষের দায় তদন্তে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও কলেজ কর্তৃপক্ষ পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করে।