শিক্ষক হৃদয় মন্ডলের মুক্তির দাবিতে শাবিতে মানববন্ধন

‘ধর্ম যার যার, বিজ্ঞান শিক্ষা সবার’

‘ধর্ম যার যার, বিজ্ঞান শিক্ষা সবার’

শাবি প্রতিনিধি || 'ধর্ম অবমাননার’ অভিযোগে গ্রেপ্তার মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার বিনোদপুর রাম কুমার উচ্চবিদ্যালয়ের বিজ্ঞানের শিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মণ্ডলের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা।

শনিবার (৯ এপ্রিল) দুপুর আড়াইটায় শাবিপ্রবি’র তিন সংগঠন—সাস্ট সাহিত্য সংসদ, সাস্ট সায়েন্স অ্যারেনা ও ক্যাম-সাস্ট—এর আয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে মানববন্ধনটি অনুষ্ঠিত হয়৷ 

এসময় শিক্ষার্থীদের ‘শিক্ষার চর্চা হোক মুক্ত, শিক্ষকের স্বাধীনতা হোক মুক্ত’, ‘ধর্ম যার যার, বিজ্ঞান শিক্ষা সবার’, ‘শিক্ষাঙ্গনে “একাডেমিক ফ্রিডম” নিশ্চিত করো’, ‘শিক্ষকের দুয়ারে আঘাত, শিক্ষার পথে পদাঘাত’, ‘ভয় দেখিয়ে মুক্তচর্চা বন্ধ করা যাবে না’, ‘কথার জবাব কথায় হোক, কলমের জবাব কলমে’, ‘বরং দ্বিমত হও, আস্থা রাখো দ্বিতীয় বিদ্যায়, বরং বিক্ষত হও প্রশ্নের পাথরে!!’, ‘শিক্ষক “হৃদয় চন্দ্র মন্ডল”-এর নিঃশর্ত মুক্তি চাই!!!’ ইত্যাদি লেখা সংবলিত প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। 

শাবিপ্রবির ভূগোল ও পরিবেশ বিদ্যা বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সুলতানা আক্তার লুবনা–এর সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. হিমাদ্রী শেখর রায় ও অর্থনীতি বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম অপূর্ব।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, শিক্ষকের আসল কাজ তার শিক্ষার্থীর চিন্তাজগতের প্রসারণ ঘটানো, কৌতূহল সৃষ্টি করা, প্রশ্নের উদ্ভব ঘটানো এবং শিক্ষার্থী যেন সে-ই প্রশ্ন নির্ভয়ে করতে পারে সেই সাহসের জোগান দেওয়া। দ্বিমত পোষণের মাধ্যমেই উঠে আসে নানা অজানা প্রশ্নের উত্তর, উন্মেষিত হয় জ্ঞানের নতুন পাথেয়। অথচ, আমরা এখানে দেখতে পাচ্ছি, একজন শিক্ষকের শিক্ষার পন্থা নিয়ে তার উপর মামলা দেয়া হচ্ছে, করা হচ্ছে গ্রেফতার। যা "একাডেমিক ফ্রিডম" এর উপর নির্মম আঘাত।

এসময় বক্তারা আরও বলেন, বিজ্ঞান চর্চা বা ভিন্নমত প্রকাশের জন্য কোন ধরনের বাধা, হয়রানি কিংবা হামলা-মামলার শিকার হওয়া একটি সমাজের ও দেশের পশ্চাদপদতার লক্ষণ। যে শিক্ষকের কাজই ছিল ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বিজ্ঞান মনষ্ক করে গড়ে তোলা আজ সেই শিক্ষকই শিক্ষাঙ্গনে নিজের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে হয়রানির শিকার। এটি একটি জাতির জন্য লজ্জার এবং আশংকাজনক বিষয়। আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই এবং অবিলম্বে শিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মন্ডলের নিঃশর্ত মুক্তি চাই।