অভিনয় জগতে ‌‘সুনাম কুড়াচ্ছেন’ সিলেটের মেয়ে!

অভিনয় জগতে ‌‘সুনাম কুড়াচ্ছেন’ সিলেটের মেয়ে!

শুরু করেছিলেন টিকটক ভিডিও দিয়ে। পরে র‌্যাম্প মডেলিং। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি সিলেটে শৈশব-তারুণ্য কাটানো সামিরা খান মাহিকে। বর্তমানে অভিনয় জগতে রীতিমতো দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন তিনি। তরুণ প্রজন্মের কাছে তিনি অত্যন্ত পরিচিত ও সমাদৃত অভিনেত্রী। 

টেলিভিশন নাটকের তরুণ প্রজন্মের যে কয়জন অভিনয়ের সঙ্গে যুক্ত আছেন, তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সিলেটের সামিরা খান মাহি। ২০১৬ সালে র‌্যাম্প মডেলিং দিয়ে বিনোদন অঙ্গনে কাজ শুরু করেন তিনি। একটা সময় এসে অভিনয়ও শুরু করেন। গত ঈদুল ফিতরে তাঁর বেশ কয়েকটি নাটক প্রচার হয়। এর মধ্যে ‘হাঙর’ নাটকের জন্য সবচেয়ে বেশি প্রশংসিত হন। নতুন বেশ কয়েকটি নাটকে কাজ করছেন এই অভিনেত্রী। 

২৬-এ পা দেওয়া প্রতিভাবান এই অভিনেত্রীর জন্ম লক্ষীপুরের একটি গ্রামে। তার শৈশবের কিছুটা সময় অতিবাহিত হয় সেখানে। পরে চলে আসেন সিলেটে। তারা তিন বোন ও এক ভাই। সামিরা মাহি হলেন তৃতীয়। এসএসসি শেষ করেন ২০১০ সালে, সিলেট নগরীর মদিনা মার্কেটের বিদ্যানিকেতন স্কুল থেকে। পরে ২০১২ সালে এইচএসসি পাস করেন সিলেটের স্কলার্স হোম নামক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে। এরপর সিলেটের লিডিং ইউনিভার্সিটি থেকে স্নাতক এলএলবি করেন। 

সামিরা প্রথম মডেলিং করেন ২০১৮ সালে। আরটিভি কালার্স-২০২০ মডেলের অনুসন্ধান প্রতিযোগিতায় প্রথম রানারআপ হন তিনি। সেখান থেকেই মূলত: তার ক্যারিয়ার শুরু। 

গত সোমবার প্রথম আলো পত্রিকায় দেওয়া সাক্ষাতকারে সামিরা জানান, 'ফুলবউ' নামক নাটকের শুটিং চলছে। মাওয়ায় সেটির কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন তিনি। চ্যানেল আইয়ে নাটকটি দেখানো হবে।
 
তিনি বলেন, গত ঈদে আমার পাঁচটি নাটক প্রচার করা হয়েছে। প্রতিটি নাটক থেকে দারুণ সাড়া পেয়েছি আমি। গত বছরের কোরবানির ঈদের পরই আমার অভিনয়জীবন শুরু। সে হিসেবে বলা যায়, প্রথম ঈদ ভালোই কাটল। কারণ, ভিন্নধর্মী চরিত্র। তবে হাঙর নাটকের জন্য অসাধারণ সব প্রতিক্রিয়া পেয়েছি। ব্যক্তিগতভাবে আমাকে অনেকে ফোনে করে জানিয়েছে, টেক্সটও করেছে। সব কটি নাটক দেখে দর্শকের কাছ থেকে এমন প্রতিক্রিয়া পাব, আশা করিনি। মানুষ যে এতটা পছন্দ করবে, ভাবিনি।

সামিরা বলেন, রোজার ঈদে শুটিং করেছি অনেক। সব কাজ অনএয়ার হয়নি। এবার হয়তো যাবে। হাঙর টিমের সঙ্গে এবার অন্য ধাঁচের নাটকের কাজ করছি। এটা ট্রেন্ডি গল্প। এই সময়েরই গল্প। এই নাটকের নাম মন বলে তুমি ফিরবেই। এর বাইরে মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজ, মাবরুর রশিদ বান্নাহ, জাকারিয়া সৌখিনের নাটকে কাজ করব।

তিনি বলেন, আমি ব্যক্তিগত জীবনে বরাবরই অন্য রকম একজন মানুষ। হয়তো পেশার জয়াগাটা বদল হয়েছে। আমি শুটিং সেট থেকে বের হয়ে গেলে মনেই থাকে না, আমি অভিনয় করি। আগে টুকটাক মডেলিং করতাম। পড়েছি আইন বিষয়ে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে। হঠাৎ অভিনয়ের সিদ্ধান্ত। ২০১৬-১৭ সালের দিকে দু-একটা নাটকে অভিনয় করি। তখন থেকে অনেকেই বলত, নিয়মিত অভিনয় করো। ভালো করবা। একটা সময় এসে ভালো লাগা তৈরি হয়। আমার কাছেও ইন্টারেস্টিং লাগতে শুরু করল। প্রতিটা দিন নতুন একটা চরিত্রে নিজেকে এক্সপ্লোর করছি। নতুন একটা মানুষ। আমার কাছে মনে হয়েছে যে আমরা টিভিতে যেটা দেখি, ওয়াও, কী সুন্দর মোমেন্ট পার করছে! অ্যাকচুয়ালি, যাঁরা অভিনয় করেন, তাঁরা ওই মোমেন্ট পার করেন কিন্তু। কল্পনা করে হলেও করেন।

পরিবারে কেউ অভিনয়ের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন কি-না এ বিষয়ে সামিরা বলেন, আমার চৌদ্দ পুরুষের কেউ অভিনয়ে ছিলেন না। বাবা সরকারি চাকরি করতেন, এখন অবসরে। মা গৃহিণী। আমরা তিন বোন, এক ভাই। আমার পরিবার শুরুতে অভিনয়টা সহজে মেনে নেয়নি। আমাদের পরিবারও ভীষণ কনজারভেটিভ। এখন অবশ্য আব্বু খুব খুশি।

তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত তো ভালোই লাগছে। ভবিষ্যতে হয়তো একটা গ্যাপ নেব, অভিনয়ের ওপর পড়তে দেশের বাইরে যাব।