রবীন্দ্র নজরুল স্মরণে সিলেটে চারণের আলোচনা সভা
বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম স্মরণে চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র সিলেট জেলার উদ্যোগে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।
রবিবার (২৮ আগস্ট) বিকেল সাড়ে চারটায় সিলেট জিন্দাবাজারস্থ নজরুল একাডেমিতে এই আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র সিলেট জেলার আহবায়ক নাজিকুল ইসলাম রানার সভাপতিত্বে এবং জেলা সংগঠক মাসুদ রানার পরিচালনায় প্রধান আলোচক হিসেবে আলোচনা করেন চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সভাপতি নিখিল দাস।
সভায় আলোচনা করেন-সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আবুল কাশেম, বাসদ জেলা সমন্বয়ক আবু জাফর, বিজ্ঞান আন্দোলন মঞ্চের প্রণব জ্যোতি পাল। আলোচনা সভায় নিখিল দাস বলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও নজরুল ইসলাম বাংলা ভাষা, সাহিত্য সংস্কৃতির দুইজন মহিরুহ ছিলেন। এই দুজন ব্যক্তিত্ব পরাধীন ভারতবর্ষে জন্ম গ্রহণ করেছিলেন ফলে তাঁদের রচনায় স্বাধীনতার আকুতি প্রকাশ পায়।
রবীন্দ্রনাথ ইংরেজ সরকার কতৃক জালিয়ানওয়ানাবাদ হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে নাইট উপাধী পরিত্যাগ করেন। কবি নজরুল তাঁর লেখনী দিয়ে এবং নিজেও ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে অনশনে বসেছিলেন। রবীন্দ্রনাথ ও নজরুল সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন। তাঁরা হিন্দু -মুসলিম মিলনে পরিপূর্ণ বিশ্বাসী ছিলেন। ব্রিটিশরা তাদের ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করার জন্য হিন্দু-মুসলমানের বিরোধকে প্রাতিষ্ঠানিক রুপ দেয়। যার বিষবাষ্পে আজও দেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় আক্রান্ত হচ্ছে।
রবীন্দ্রনাথ ও নজরুল তাঁদের লেখনীর মধ্য দিয়ে চাষী-মজুরদের দুঃখ দুর্দশার কথা তুলে ধরেন। শ্রমজীবী মানুষের প্রতি অত্যাচার নিপীড়ন, শোষণে তাঁরা মর্মাহত হতেন। শ্রেণির বৈষম্যের অবসান কামনা করতেন। আজ আমাদের দেশে রাষ্ট্র ব্যবস্থা শোষক পুঁজিপতিদের স্বার্থে পরিচালিত হচ্ছে। এখানে শ্রমজীবীদের সকল অংশই অবহেলিত নির্যাতিত। চা শ্রমিকরা ১৯ দিন ধর্মঘট করে দৈনিক মজুরি মাত্র ৫০ টাকা বাড়াতে পেরেছে। এটা আধুনিক দাসের মতোই চা শ্রমিকদের সাথে রাষ্ট্রের আচরণ।
আজ এই দুজন মনিষীর রচনা থেকে শিক্ষা নিয়ে অসাম্প্রদায়িক, বৈষম্যহীন, শোষনমুক্ত, সাম্যের সমাজের পরিপূরক একটু সাংস্কৃতিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। এই আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
আলোচনা সভা শেষে চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র সিলেট জেলার উদ্যোগে রবীন্দ্র সংগীত ও নজরুল সংগীত পরিবেশন করা হয়। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অথিতি শিল্পী হিসেবে রবীন্দ্র সংগীত পরিবেশন করেন অনিমেষ বিজয় চৌধুরী এবং নজরুল সংগীত পরিবেশন করেন বিজন রায়।