হবিগঞ্জে কারাগারে থেকেও মামলার আসামি যুবদল নেতা রুবেল
হবিগঞ্জ জেলা কারাগারে থেকেও আওয়ামী লীগের দায়ের করা মামলায় আসামি হলেন হবিগঞ্জ জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি মোঃ তৌফিকুল ইসলাম রুবেল। কারাগারে থেকেও কি ভাবে মামলার আসামি হলেন রুবেল এমন বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সর্বত্র বইছে নানা আলোচনা ও সমালোচনা। যদিও পুলিশ বলছে, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যুবদল নেতা তৌফিকুল ইসলাম রুবেল হবিগঞ্জ পৌর এলাকার তেঘরিয়া গ্রামের মৃত সাইফুল ইসলামের পুত্র।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ১৯ আগস্ট শনিবার বিকেলে শহরের শায়েস্তানগর এলাকায় বিএনপি নেতাকর্মীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। যার সূচনা হয় বিএনপির বিক্ষোভ ও পদযাত্রাকে কেন্দ্র করে। টানা কয়েক ঘন্টা চলে এ সংঘর্ষ। এতে হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি অজয় চন্দ্র দেবসহ প্রায় ১০ পুলিশ সদস্য আহত হয়। অপরদিকে পুলিশের ছোঁড়া গুলি ও টিয়ারশেলে আহত হয় বিএনপির বেশ কিছু নেতাকর্মী। পরে এ ঘটনায় হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার এসআই খোরশেদ আলম বাদী হয়ে পুলিশ অ্যাসল্ট মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় ৮০ নম্বর আসামী করা হয় তৌফিকুল ইসলাম রুবেলকে। ওইদিন রাতেই পুলিশ অভিযান চালিয়ে রুবেলকে গ্রেফতার করে পরদিন কারাগারে প্রেরণ করে।
এদিকে, ২০ আগস্ট রোববার বিকেলে শহরের শায়েস্তানগর এলাকায় হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে বিএনপির ভাংচুর নৈরাজ্যের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করা হয়। বিক্ষোভ মিছিলটি শায়েস্তানগর এলাকায় জেলা বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয়ের সামনে পৌছলে উভয় পক্ষের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। ভাংচুর করা হয় বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয়। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়। খবর পেয়ে হবিগঞ্জ সদর থানার একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে কাদানো গ্যাস নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করে।
এ ঘটনায় ২৫ আগস্ট শুক্রবার দিবাগত রাতে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মহিবুর রহমান মাহি বাদি হয়ে হবিগঞ্জ সদর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ে করেন। মামলায় জেলা ছাত্রদল সভাপতি শাহ রাজিব আহমেদ রিংগনকে প্রধান করে ৮৮ জনের নামে উল্লেখসহ ২৩৮ জন বিএনপি নেতা-কর্মীকে অসামী করা হয়েছে। এই মামলায়ও ৩৭ নম্বর আসামি করা হয়েছে যুবদল নেতা তৌফিকুল ইসলাম রুবেলকে। আর এতে করে কারাগারে থেকেও তিনি হলেন মামলার আসামি। যা নিয়ে চলছে আলোচনা ও সমালোচনা।
এ বিষয়ে হবিগঞ্জ জেলা যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান সিতু জানান, পুলিশের দায়ের করা পুলিশ অ্যাসল্ট মামলায় কারাগারে রয়েছেন আমাদের জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি তৌফিকুল ইসলাম রুবেল। কিন্তু কারাগারে থেকেও তিনি আওয়ামী লীগের দায়ের করা মামলার আসামি হয়েছেন।
তৌফিকুল ইসলাম রুবেলের বিষয়ে জানতে চাইলে হবিগঞ্জ জেলা কারাগারের জেলার মোহাম্মদ মাসুদ হাসান জুয়েল রুবেলের কারাগারে থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, গত ২০ আগস্ট থেকে রুবেল হবিগঞ্জ জেলা কারাগারে রয়েছেন।
হবিগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ খলিলুর রহমান জানান, পুলিশ অ্যাসল্ট মামলার বাদী তো পুলিশ। আর মামলা তো পাবলিকের ঘটনা পাবলিক মামলা করছে। পাবলিক কি ভাবে তাকে আসামি করল এটা আসলে দেখার বিষয়।
বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে। খলিলুর রহমান বলেন, পাবলিক এসল্ট মামলা তো তদন্ত করার সুযোগ থাকে না। মামলা হওয়ার পরে তদন্ত করতে হয়।