ফের রগ কাটার রাজনীতি: যুবলীগ নেতাকে হাত-পায়ের রগ কেটে হত্যা

ফের রগ কাটার রাজনীতি: যুবলীগ নেতাকে হাত-পায়ের রগ কেটে হত্যা

বিএনপি ও জামায়াত-শিবির আবারও রগ কাটার রাজনীতি শুরু করেছে। গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে যুবলীগ নেতার হাত-পায়ের রগ কেটে হত্যা করেছে তারা। এসময় আরেকজনকে আহত করা হয়। এই সুন্দরগঞ্জে ২০১৩ সালে জামায়াত নেতা সাঈদীর ফাঁসির রায়কে কেন্দ্র করে তাণ্ডব চালিয়েছিল তারা। ওই সময় চার পুলিশ সদস্যকে কুপিয়ে হত্যা করেছিল জামায়াত-শিবিরের সন্ত্রাসীরা।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সুন্দরগঞ্জ উপজেলার সোনারায় ইউনিয়ন আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম এক সঙ্গীকে নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। রবিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে তারা বামনডাঙ্গা-সুন্দরগঞ্জ সড়কের শাখামারা ব্রিজ এলাকায় তার উপর হামলার শিকার হন। প্রথম ৭-৮ জন হঠাৎ রশি টেনে মোটরসাইকেল গতিরোধ করে। এরপর ধারালো অস্ত্র দিয়ে জাহিদুলের দুই হাত ও দুই পায়ের রগ কেটে দেয় এবং মাথাসহ শরীরে একাধিক কোপ দেয়। লাঠি দিয়ে পিটিয়ে আহত করা হয় তার সঙ্গে থাকা কবিরকে। পরে স্থানীয় লোকজন রক্তাক্ত অবস্থায় তাদেরকে উদ্ধার করে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। এরপর জাহিদুলকে দ্রুত রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে রাত পৌনে ৩টার দিকে মারা যান তিনি।

সুন্দরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আশরাফুল আলম সরকার লেবু বলেন, ‘ঘটনাটি পরিকল্পিত। হামলার সময় জাহিদুল কয়েকজনকে চিনতে পেরেছিলেন। এদের মধ্যে মুছা, সামু, ইমতিয়াজ ও খাদেমুল জামায়াত, শিবির ও বিএনপি কর্মী। অন্য হামলাকারীরা জামায়াত-শিবিরের কর্মী।’

সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি কে এম আজমিরুজ্জামান বলেন, ‘গুরুতর আহত অবস্থায় জাহিদুলকে যখন হাসপাতালে আনা হয় তখন তিনি হামলাকারী কয়েকজনের নাম বলেছেন। এরমধ্যে মুছা, সামু, ইমতিয়াজ ও খাদেমুল জামায়াত-শিবির কর্মী। তাদের ধরা গেলে অন্য হামলাকারীদের চিহ্নিত ও গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে।’

২০১৩ সালে ২৮ ফেব্রুয়ারি মানবতাবিরোধী অপরাধে জামায়াত নেতা দেলওয়ার হোসেন সাঈদীর ফাঁসির আদেশের পর সুন্দরগঞ্জে জামায়াত-বিএনপির নেতা-কর্মীরা তাণ্ডব চালায়। দফায়-দফায় হামলা, অগ্নিকাণ্ড আর লুটপাট চালানো হয় বামডাঙ্গা রেল স্টেশন, আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়, মুক্তিযোদ্ধা কার্যালয় ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে। এক পর্যায়ে কুপিয়ে হত্যা করা পুলিশ সদস্য তোজাম্মেল হক, নজিম উদ্দিন, বাবলু মিয়া ও হযরত আলীকে।

আশির দশকের গোড়ার দিকে রগ কাটার সন্ত্রাস শুরু করেছিল জামায়াত-শিবির। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্য মতের ছাত্র নেতাদের হাত-পায়ের রগ কাটা, গান পাউডার ব্যবহার করে পুড়িয়ে মারা এবং খুনের পর ম্যানহোলে লাশ ফেলে দিতো শিবির। পরবর্তীতে তারা সারাদেশে এই অপকর্ম চালিয়েছে।