আমেরিকার বিরুদ্ধে যাওয়ার ভয়ে মুখ খুললেন না চরমোনাই পীর

আমেরিকার বিরুদ্ধে যাওয়ার ভয়ে মুখ খুললেন না চরমোনাই পীর

 

ধর্মকে ব্যবহার করে নিজেদের ফায়দা হাসিলের রাজনীতিতে সিদ্ধ চরমোনাই পীর একটা কথাও বললেন না ফিলিস্তিনের নির্যাতিত, নিপীড়িত মানুষের পক্ষে। বরং ইসলামের ঝাণ্ডাধারী চরমোনাই এখন সরকার পতনের দবিতে আগামী ৩ নভেম্বর ঢাকায় মহাসমাবেশের ডাক দিয়েছেন।

শুক্রবার রাজধানীর বায়তুর মোকাররমের দক্ষিণ গেইটে আয়োজিত ইসলাম আন্দোলনের ছাত্র ও যুব সংগঠনের সমাবেশে দেওয়া ভাষণে শুধু চরমোনাই পীর না, তার দলের একজন নেতাও তাদের বক্তব্যে ফিলিস্তিন ইস্যু নিয়ে কোনো কথা বলেননি। বরং এক নেতা বলেছেন, ফিলিস্তিনীরা যদি অধিকার আদায় করার জন্য বুলেটের সামনে ঝাপিয়ে পড়তে পারে তবে অধিকার আদায় করার জন্য আমরাও ময়দানে ঝাপিয়ে পড়তে প্রস্তুত আছি।

গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলে বোমা হামলায় নিহত, আহত ও নির্যাতিত ফিলিস্তিনের মুসলিম জনগোষ্ঠির সমর্থনে এবং ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ২০ অক্টোবর শুক্রবার বিশ্বব্যাপী বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে।

অথচ ঢাকায় চরমোনাই পীরের সমাবেশে সরকার পতনের দাবিতে বক্তব্য রাখলেও সেখানে ইসরায়েলের বোমা হামলায় নিহত, আহত ও নির্যাতিত ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার মুসলিম জনগোষ্ঠির জন্য একটা কথাও বলেননি। শুক্রবারের সমাবেশে যোগ দেওয়া অনেককেই বলতে শোনা গেছে,ফিলিস্তিনি নির্যাতিত মানুষের জন্য একবারের জন্যও ‘দিল’ গলেনি চরমোনাই পীরের।

সমাবেশে বক্তব্য রাখা নেতাদের বক্তব্য পর্যালোচনা করে এবং ইসলামী আন্দোলনের পক্ষ থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তাদের নেতাদের বক্তব্য বিশ্লেষণ করেও ফিলিস্তিনিদের বিষয়েও কোনো বক্তব্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

সমাবেশে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই দীর্ঘ বক্তব্য দিয়েছেন। যার প্রতিটা শব্দ ছিলো সরকারের বিরুদ্ধে। সরকারকে ক্ষমতা থেকে নামানোর জন্য তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দিয়েছেন। এজন্য ৩ নভেম্বরের সমাবেশে যোগ দিতে বলেছেন। তার দীর্ঘ বক্তব্যে কোথাও উচ্চারণ করেননি ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের বোমা হামলায় নিহত হাজার হাজার নারী, পুরুষ ও শিশুর কথা।

শুধু তিনি নয়, সমাবেশে বক্তব্য রাখেন দলটির সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রিন্সিপাল মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মদ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই, প্রেসিডিয়াম সদস্য আল্লামা নুরুল হুদা ফয়েজী, মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমানসহ আরো অনেকে।

এদের মধ্যে শুধুমাত্র সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই বলেন, ফিলিস্তিনীরা যদি অধিকার আদায় করার জন্য বুলেটের সামনে ঝাপিয়ে পড়তে পারে, তবে অধিকার আদায় করার জন্য আমরাও ময়দানে ঝাপিয়ে পড়তে প্রস্তুত আছি। দিল্লির গোলামী আমরা মানবো না। আর দলটির মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ তার বক্তব্যে বলেন, ইজরায়েলের হামলায় নিহতদের শাহাদাৎ কামনা করছি।

এর বাইরে নেতাদের কেউই ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে একটা কথাও বলেননি।

এদিকে, তাদের এই সরকার বিরোধী সমাবেশ নিয়ে সাদারণ মুসল্লিদের মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা গেছে। তারা বলছেন, চরমোনাই মন্ত্রী, এমপি হওয়ার জন্য পাগল হয়ে গেছেন। কিন্তু তিনি গাজার মুসলামনদের জন্য একটা কথাও বললেন না। যদি সেটা আমেরিকার বিরুদ্ধে চলে যায় তাহলে তার স্বপ্ন পূরণ হবে না। এজন্য তিনি ইসরায়েলে বিরুদ্ধে কথা বলেননি। চুপ ছিলেন।