বিনামূল্যে আইনি সহায়তায় সুবিধাবঞ্চিতরাও বিচার পাচ্ছেন : ভিসি জহিরুল

বিনামূল্যে আইনি সহায়তায় সুবিধাবঞ্চিতরাও বিচার পাচ্ছেন : ভিসি জহিরুল

বিনামূল্যে আইনগত সহায়তায় সুবিধাবঞ্চিত প্রান্তিক জনগোষ্ঠী ন্যায়বিচার পাচ্ছেন বলে মন্তব্য করেছেন মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জহিরুল হক।

মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে প্রফেসর এম হাবিবুর রহমান হলে সিলেট জেলা লিগ্যাল এইড অফিসের উদ্যোগে সরকারি আইনগত সহায়তা বিষয়ক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। 

এই সেমিনারে মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির আইন ও বিচার বিভাগের বিভিন্ন ব্যাচের নির্বাচিত ৫০ জন শিক্ষার্থীসহ শিক্ষক অংশগ্রহণ করেন।

ভিসি জহিরুল হক বলেন, ‘আইনের দৃষ্টিতে সকলেই সমান। আইনগত সহায়তাপ্রাপ্তির অধিকার মূলত একটি সাংবিধানিক অধিকার। আমাদের দেশে বছরের পর বছর মামলাগুলো পরে থাকে। অনেকে বিনা অপরাধে বিভিন্নভাবে মামলার শিকার হয়ে হয়রানীর সম্মুখীন হন। সামর্থ্যবানরা মামলা মোকাবেলা করার জন্য আইনজীবী নিয়োগ করতে পারলেও অনেক সুবিধাবঞ্চিত প্রান্তিক জনগণ অর্থাভাবে তা করতে না পেরে কোনো কোনো সময় মামলায় হেরে যান। এতে ন্যায়বিচার বিঘ্নিত হচ্ছে। লিগ্যাল এইড অফিসের মাধ্যমে অসহায় বিচারপ্রার্থীদের বিনামূল্যে আইনগত সহায়তা প্রদান সরকারের একটি যুগান্তকারী উদ্যোগ। এতে সুবিধাবঞ্চিত প্রান্তিক জনগোষ্ঠীরা ন্যায়বিচার পাচ্ছেন।’

মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের কর্মজীবনে মানবিক হওয়ার আহ্বান জানিয়ে ভিসি বলেন, ‘এখান থেকে যারা আইন পেশায় যাবেন অনুগ্রহ করে সাধারণ মানুষকে হয়রানীর চক্রে ফেলবেন না। দেশের মামলাজট ন্যায়বিচার পাওয়ার ক্ষেত্রে অন্যতম বাধা। আমরা প্রায়ই শুনি ১৫ থেকে ২০ বছর জেলে থাকার পর সে নিরপরাধ। এটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সভ্য সমাজ ব্যবস্থায় কাম্য হতে পারে না। বিকল্প নিরোধ নিষ্পত্তি ও নিরপেক্ষ সালিশ ব্যবস্থা জনগণকে বিচারকার্যের দীর্ঘসূত্রিতা থেকে মুক্তি দিতে পারে। সরকারের বিনামূল্যে আইনগত সহায়তা কার্যক্রমকে জনগণের দোরগোড়ায় নিয়ে যেতে হবে।’

সেমিনারে প্রধান আলোচক হিসেবে সিলেট জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার ও সিনিয়র সহকারি জজ বিরেশ্বর সিংহ বলেন, ‘আর্থিকভাবে অসচ্ছল, সহায়সম্বলহীন এবং নানাবিধ আর্থসামাজিক কারণে বিচার পেতে অসমর্থ বিচারপ্রার্থী জনগণকে সরকারি খরচে আইনগত সহায়তা প্রদান করার লক্ষ্যে ‘আইনগত সহায়তা প্রদান আইন, ২০০০’ প্রণীত হয়। প্রতিমাসে অসংখ্য অসহায় লোক জেলা লিগ্যাল এইড অফিসের সহায়তা পাচ্ছেন। ২৬ জন নারী আইনজীবীসহ মোট ৭৬ জন প্যানেল আইনজীবীর মাধ্যমে আমরা বিনামূল্যে আইনগত সহায়তা দিয়ে যাচ্ছি। সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ হলেন এর সভাপতি। আমাদের প্যানেলভূক্ত অনেক মানবিক আইনজীবী আইনগত সহায়তার পাশাপাশি অসহায়দের আর্থিক সুবিধা দেন। যা প্রশংসনীয়।’

আইন ও বিচার বিভাগের প্রধান গাজী সাইফুল হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্কুল অব বিজনেস এন্ড ইকোনোমিক্স এর ডিন প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন, স্কুল অব ল এর ভারপ্রাপ্ত ডিন শেখ আশরাফুর রহমান। বক্তব্য রাখেন ছাত্রকল্যাণ উপদেষ্টা ড. এমজেড আশরাফুল।