মৌলভীবাজারে প্রস্তুত ৬৮ হাজার গবাদিপশু, বিক্রিবাট্টা নিয়ে শঙ্কা

মৌলভীবাজারে প্রস্তুত ৬৮ হাজার গবাদিপশু, বিক্রিবাট্টা নিয়ে শঙ্কা
ফাইল ছবি

মৌলভীবাজার জেলায় আসন্ন ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে ৬৮ হাজার ৩১১টি গবাদিপশু বিক্রির জন্য প্রস্তুত রয়েছে। এ পশুগুলোর মধ্যে রয়েছে গরু-মহিষ এবং ছাগল-ভেড়া। গত দুই বছরের তুলনায় এবারের কোরবানির জন্য প্রস্তুত পশুর সংখ্যা কম পরিলক্ষিত হয়েছে।

এদিকে বর্তমান করোনা সংক্রমণের মহাক্রান্তিকালে পশুগুলো বিক্রিবাট্টা কেমন হবে, তা নিয়েও গভীর শঙ্কার মধ্যে রয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

খামারিরা বহু কষ্ট করে নিজেদের খামারগুলো তিলে তিলে গড়ে তুলেছেন। লাখ-লাখ, কোটি-কোটি টাকা এখানে তারা বিনিয়োগ করেছেন।
 
জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, গত বছর কোরবানি জন্য পশু প্রস্তুত ছিল প্রায় ৭০ হাজার। এর আগের বছর ছিল আরো দশ হাজার বেশি অর্থাৎ ৮০ হাজার।

গত দুই বছরে দেশে করোনা সংক্রমণে ঝুঁকি এবং তীব্রতা প্রকাশিত হওয়ায় মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থায় মন্দাভাব বিরাজ করে। ফলে প্রয়োজনের বাইরে গিয়ে বেশি কেনার মতো স্বচ্ছলতা বা আর্থিক সামর্থ্য অনেকেরেই আজ নেই।
এর কারণ হিসেবে প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের মাঠ পর্যায়ের জরিপে জানা গেছে, করোনা সংক্রমণের কারণে বহু প্রবাসী এবার দেশে আসতে পারছেন না। ফলে চাহিদা খুব বেশি হবে না। চাহিদা যতটুকু হবে, তা স্থানীয় গবাদিপশুই পূরণ করবে বলে প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের ধারণা।  

এ ব্যাপারে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আব্দুস ছামাদ বলেন, আসন্ন পবিত্র কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে আমরা মৌলভীবাজারে ৬৮ হাজার ৩১১টি পশু মজুদ রেখেছি। এর মধ্যে পেশাদার খামারি এবং অপেশাদার উদ্যোক্তা বা পারিবারিকভাবে পালন করা পশু যুক্ত হয়েছে। খামারিদের গরু-মহিষের সংখ্যা ২২ হাজার ৫০১টি এবং ছাগল-ভেড়ার সংখ্যা ১০ হাজার ২৮টি।  

আর অপেশাদার উদ্যোক্তা বা পারিবারিকভাবে পালিত গরু-মহিষের সংখ্যা ২৪ হাজার ৪৫৯টি এবং ছাগল-ভেড়ার সংখ্যা ১১ হাজার ৩২৩টি বলে তিনি জানান।

অনলাইনে পশু বিক্রি সম্পর্কে তিনি বলেন, বর্তমান সময়ে করোনার ভয়াবহ পরিস্থিতি নিয়ে আমরা সবাই উদ্বিগ্ন। তবে কেউ কেউ অবশ্য ব্যক্তিগতভাবে অনলাইনভিত্তিক কোরবানির পশু বিক্রয় কার্যক্রম শুরু করেছেন। আমরা শিগগিরই এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব। স্থানীয়ভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, ওয়াটসঅ্যাপসহ প্রভৃতিতে গরুর ছবি ও ভিডিওসহ খামারিদের সঙ্গে আমরা দ্রুত সমন্বয় করিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করব, যাতে করে সরকারি স্বাস্থ্যবিধির নির্দেশনাগুলো পালন করা হয়।

অনেক খামারি আমাদের বলে রেখেছেন, কোনো ক্রেতা গরু কিনতে আগ্রহী হলে যেন আমরা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেই। সে লক্ষ্যেও আমরা কাজ করছি। ফলে গরুর ক্রেতারা খামারিদের কাছ থেকে অগ্রিম গরু কিনতে পারছেন। এতে করে করোনার সংক্রমণরোধে স্বাস্থ্যবিধির দিকটিও রক্ষা পাচ্ছে বলে ডা. মো. আব্দুস ছামাদ জানান।  

জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মৌলভীবাজার সদর, শ্রীমঙ্গল, কমলগঞ্জ, রাজনগর, কুলাউড়া, জুড়ি, বড়লেখাসহ মোট সাত উপজেলায় মিলে গরু মোটাতাজাকরণ এবং ছাগল-ভেড়ার খামার রয়েছে প্রায় দুই হাজারের বেশি।  

এদিকে দেশে প্রায় এক কোটি ১৯ লাখ গবাদিপশু প্রস্তুত আছে এবং আসন্ন ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে দেশের বাইরে থেকে কোনো পশু আনার প্রয়োজন পড়বে না বলে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউক করিম গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন।