জলে ভাসছে সিলেট

শত কোটি টাকা খরচ করে কি পেল সিলেট?

শত কোটি টাকা খরচ করে কি পেল সিলেট?

প্রায় ২শ কোটি টাকা ব্যয় করেও সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) এলাকায় সেই পুরানো জলাবদ্ধতা নিরসন করা সম্ভব হয়নি। শহরের প্রধান প্রধান সড়কের পাশে উঁচু ও বড় করে নির্মাণ করা ড্রেনগুলো বর্ষা মৌসুমে পানি নিষ্কাশন করতে পারছে না। এতে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে নগরবাসীকে।

সম্প্রতি নির্মাণ করা ড্রেনও ভালোভাবে পানি নিষ্কাশন করতে পারছে না বলে দাবি করছেন স্থানীয়রা।

নগরীর প্রাণকেন্দ্র জিন্দাবাজার মোড়, সুবিদবাজার-মদিনা মার্কেট রাস্তা, শিবগঞ্জ-মিরের ময়দান সড়ক, উপশহরের বিভিন্ন রাস্তা, মেডিকেল রোড, মিরের ময়দান রোড, শাহী ঈদগাহ, কদমতলী-বাস টার্মিনাল রোডসহ কয়েকটি সড়কের বিভিন্ন স্থানে গত কয়েক দিনে জলাবদ্ধতা দেখা যায়।

অতিবৃষ্টি হওয়ায় হাঁটু পানি মাড়িয়ে সেসব রাস্তায় যানবাহন ও লোকজনকে চলাচল করতে দেখা গেছে। নগরের দক্ষিণ সুরমা এলাকার বাসিন্দা মুন্না মিয়া জানান, এ বছর বৃষ্টির জলাবদ্ধতায় শহরের উঁচু-নিচু সব এলাকাই ডুবেছে। এটা আগে কখনো সিলেটে ঘটেনি।

রায়নগর এলাকার আবু আসাদ বলেন, আমাদের এলাকার অনেক বাসায় পানি ঢুকে আসবাবসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র নষ্ট হয়ে গেছে। এসব এলাকার বাসিন্দারা জানান, রাস্তা থেকে বৃষ্টির পানি গড়িয়ে ড্রেনে পড়ার যে পথ রাখা হয়েছে, তা ছোট হওয়ায় পানি নিষ্কাশনে বিলম্ব হচ্ছে। ফলে অধিকাংশ এলাকার রাস্তায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে।

জলাবদ্ধতা নিরসনে স্থায়ী সমাধানের জন্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ দরকার মন্তব্য করে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সিলেটের সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘সিটি করপোরেশন বক্স কালভার্ট নির্মাণ করছে আর বিশেষজ্ঞরা এতে মানা করছেন। তা হলে তারা কার পরামর্শে কাজ করেন।’

তিনি আরো বলেন, ‘এখন প্রশ্ন হলো, ৫২৩ কোটি টাকা ব্যয়ের পরও আমরা সুফল পাচ্ছি না কেন? জনগণের টাকা অপচয় না করে স্থায়ী সমাধানের জন্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী সুরমা নদীর তলদেশ খননের ব্যবস্থা নেওয়া হোক।’

সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নুর আজিজুর রহমান বলেন, ‘পরিকল্পনা করে ড্রেন করা হয়েছে। রাস্তা থেকে ড্রেনে পানি নিষ্কাশনের ছিদ্র বা ছোট পথে অনেক সময় আবর্জনায় আটকে যায়। এতে দ্রুত পানি নিষ্কাশন হয় না। অতিবৃষ্টি হলে এমনিতে পানি নামতে সময় লাগে। আমরা চেষ্টা করব, ওই পথগুলো বড় করার।’

তিনি আরো বলেন, ‘৯০ কোটি টাকার আরেকটি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে ৪০ কোটি টাকা ব্যয় হবে ড্রেনের উন্নয়নে। তা হলে সমস্যার সম্পূর্ণ সমাধান হবে।’

জানা যায়, সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) এলাকায় প্রায় এক হাজার ১০০ কিলোমিটার ড্রেনের মধ্যে নগরের প্রধান প্রধান সড়কের পাশের ড্রেন হচ্ছে ৫৫০ কিলোমিটার। ইতোমধ্যে যার প্রায় ৮০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। এতে ব্যয় হয়েছে ২২০ কোটি টাকা। বাকি কাজ শেষ করতে আরো ৯০ কোটি টাকা বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে। গেল জুনে এসব কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও আগামী জুন পর্যন্ত সময় বাড়িয়েছে কর্তৃপক্ষ।